বাঘাইছড়ির তৃণমুলে ক্ষমতাসীনদলের অর্ন্তকোন্দলে দিশেহারা নেতাকর্মীরা!


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০২:০৯ এএম, ২০২৩-১১-০৩

বাঘাইছড়ির তৃণমুলে ক্ষমতাসীনদলের অর্ন্তকোন্দলে দিশেহারা নেতাকর্মীরা!

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে আওয়ামীলীগের অর্ন্তকোন্দল ইউনিয়ন থেকে উপজেলা পর্যায় হয়ে এখন জেলায় ঠেকেছে। প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামীলীগের চরিত্রহননের অভিযান চালানো হচ্ছে। অতি সম্প্রতি আমতলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক রাসেল চৌধুরীকে দল থেকে আজীবন বহিস্কারের সুপারিশের তথ্য প্রকাশের লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করার পরপরই পাল্টা হিসেবে রাসেল চৌধুরী এবার রাঙামাটির জেলা নেতৃবৃন্দের নিকট সরেজমিনে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন। 


জানাগেছে, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের শাখার প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এবং আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীকে বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এই লক্ষে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা আওয়ামীলীগ বরাবরে রেজুলেশন করে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তুলে ধরেন।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অভিযুক্ত রাসেল চৌধুরীর কাছে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতিপয় নামধারী আওয়ামীলীগ নেতা ও কাঠ পাচারকারী চক্র সংঘবদ্ধভাবে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জেলা আওয়ামীলীগ যেই সিদ্ধান্ত নেবে সেটি আমি মাথা পেতে নেব। রাসেল জানান, আমি ইতিমধ্যেই রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি/সম্পাদক বরাবরে আবেদন করেছি। উক্ত আবেদনে রাসেল চৌধুরী উল্লেখ করেন, আমার বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন যেসকল অভিযোগ তুলেছেন সেসব সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলতঃ গিয়াস উদ্দিন, বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গিয়াস উদ্দিন বাঘাইছড়ি বিভিন্ন মাধ্যমে আমি ও আমার স্ত্রীর কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও আমার বাবার কাছ থেকেও টাকাগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও আমতলি ইউনিয়নের সীমানা থেকে ১৮০টি গাছ কেটে নিয়েগেছে, সেটি নিয়ে আমি বনবিভাগেও অভিযোগ দিয়েছি। এছাড়াও দলের একজন প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে আমাকে দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করাতে নাপেরে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে হেয় করার জন্যই এসবগুলো করানো হচ্ছে। আমি সবগুলো বিষয় যথাযত তথ্য প্রমানসহ আমার দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ন্যায় বিচারের স্বার্থে সরেজমিনে তদন্তের আবেদন করেছি। সেক্ষেত্রে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের সত্যতা পেলে দল থেকে যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই আমি মেনে নিবো”।


এদিকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধীদলগুলোর অব্যাহত রাজনৈতিক চাপ ছাড়াও রাঙামাটিতে ক্ষমতাসীনদল আওয়ামীলীগের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে আসলে আঞ্চলিকদলগুলো। এমতাবস্থায় তৃণমুল পর্যায়ের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অর্ন্তকোন্দল সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টিকে বিষফোঁড়া উঠার মতো পরিস্থিতির তুলনা করছে স্থানীয়রা।