পাহাড়ে বৈধ জোত পারমিটের আড়ালে অবৈধ কাঠ পাচার! ৩'শ ঘনফুট গাছ জব্দ


নুরুল কবির    |    ০২:৫৮ পিএম, ২০২৩-১০-১৯

পাহাড়ে বৈধ জোত পারমিটের আড়ালে অবৈধ কাঠ পাচার! ৩'শ ঘনফুট গাছ জব্দ

বান্দরবানে বনবিভাগের অভিযানে  প্রায় ৩শ ঘনফুট বিভিন্ন প্রজাতের গাছ জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বনবিভাগে কমকর্তাা নিউ গুলশান স"মিল থেকে এ অবৈধ কাঠ গুলো জব্দ করে।

এদিকে বান্দরবানে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের জোত পারমিট দিয়ে অশ্রেণিভুক্ত সরকারি বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাঠ পাচারকারী চক্র দুর্গম পাহাড়ে ট্রাক চলাচলের জন্য নিজেরাই গোপন রাস্তা নির্মাণ করেছেন। ওই রাস্তায় ট্রাকে করে বনের মাতৃগাছগুলো কেটে নিয়ে আসা হচ্ছে লোকালয়ে। এরপর বাগানের জোত পারমিট দেখিয়ে সেসব পাচারও করা হচ্ছে। 

এভাবে বান্দরবানে প্রাকৃতিক ও সংরক্ষিত বনে অবৈধ ভাবে গাছ কাটা ও পাচার চলছে। শুষ্ক মৌসুমে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। স্থানীয়দের দাবি, চোরকারবারিদের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে উজাড় হচ্ছে এই বনের গাছ। তাই কোনোভাবেই থামছে না সরকারি বনাঞ্চলের কাঠ পাচার। 


যার কারণে দিন দিন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে পরিবেশ। সৌন্দর্য হারাচ্ছে প্রকৃতি। কমছে পানির উৎস। আবাসস্থল হারাচ্ছে বন্য জীবজন্তু। দিন দিন বাড়ছে লোকালয়ে প্রবেশের ঘটনা। এতে ক্ষতি সাধিত হচ্ছে মানুষের জানমালের। তবে কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ী কাছে এক ধরনের জিম্মি হয়ে পড়েছে বন বিভাগ। 

সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বন ও প্রকৃতি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য বজায় রাখা, দুর্যোগ মোকাবিলা, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বনের ভূমিকা অপরিসীম। সেই বনের মূল্যবান গাছই এখন বিপন্ন। কিছু অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহায়তায় ও ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে কাঠ পাচার করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। প্রতিদিন জোত পারমিটের নামে হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ পাচার করছে চক্রের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরের নিউ গুলশান, উজানি পাড়া, বালাঘাটা ও কালাঘাটার বিভিন্ন গাছের ডিপোতে প্রাকৃতিক বন থেকে পাচার হয়ে আসা প্রায় ৫০ হাজার ঘনফুট কাঠ মজুদ করেছে চোরাকারবারিরা। বান্দরবান ও চট্টগ্রামের কিছু প্রভাবশালী কাঠ ব্যবসায়ী অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহায়তায় গাছ পাচারের সঙ্গে জড়িত। সংঘবদ্ধ এসব চক্র প্রায় অর্ধ লক্ষ ঘনফুট কাঠ মজুদ করেছে বলে জানা যায়। জেলা সদরের উজানিপাড়া স"মিল, নিউগুলশান স"মিল, পচ্শিম বালাঘাটা স"মিল ও বালাঘাটা বাজার এলাকার ডিপোতে মজুদের সিংহ ভাগ কাঠ রয়েছে বলে জানা যায়।

মঙ্গলবার সকালে নিউগুলশান স"মিল পরিদর্শনে গেলে রেঞ্জ কর্মকর্তার নামে ইস্যু করা  হাতুড়ি দিয়ে কাঠের মাথায় ছাপ দিতে দেখা যায় শ্রমিকদের। এবং সরকারী হেমার এখন কাঠ ব্যবসায়ীদের হাতে হাতে হয়ে পড়েছে।

অভিযানে বনবিভাগ হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ জব্দ করেছে বলে জানালেও অবৈধ কাঠ মজুদের দায়ে কোন মামলা রুজু করে নি। তাই কাঠ পাচার থামছে না বলে জানান, পরিবেশ নিয়ে কাজ করা মামুন ইসলাম।

এবিষয়ে বান্দরবানের  রেঞ্জ কর্মকর্তা খ্যায়াচলং রেঞ্জ শাখার জুয়েল চৌধুরী বলেন, সরকারী হেমার যদি কোন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকে হাতে পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা করা হবে। এবং বিভিন্ন তথ্য মোতাবেক আমরা বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রজাতের অবৈধ কাঠ জব্দ করেছি-অভিযান অব্যহত থাকবে