নিজস্ব প্রতিবেদক | ১১:২৩ পিএম, ২০২৩-০৩-২৮
রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সারা বছর অবাধে কাঠ পাচারের মহৎসব চলছে।কতিপয় কাঠ চোরের যোগসাজসে প্রতিদিন উপজেলার নাইক্যছড়া, বাঙালহালিয়া, ইসলামপুর জামতলা, বড়ইতলি, আমতলি উদালবুনিয়া হয়ে খুরুশিয়া রাজারহাট, রেন্জ কারিগর পাড়া হয়ে চন্দ্রঘোনার ফেরীর উপর দিয়ে শত শত ঘন ফুট কাঠ পাচার হচ্ছে। ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে পরিবেশ। সৌন্দর্য হারাচ্ছে প্রকৃতি। হাত করাত স্থাপন করে রাত দিন বৃক্ষ চিরাই করা হচ্ছে। কাঠ ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে গাছ কিনে তা কেটে মিনি ট্রাক ও চাঁদের গাড়ী বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছেন।ব্যবসায়ীরা গাছ কিনে চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, শিলক, সরভভাটা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। এসব কাঠ ইটভাটার জ্বালানি এবং পারটেক্স ও দেশলাই কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে।সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বন ও প্রকৃতি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য বজায় রাখা, দুর্যোগ মোকাবিলা, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বনের ভূমিকা অপরিসীম।
বনভূমি বেদখল চলতে থাকলে আগামি ৭/৮ বৎসরের মধ্যে সরকারের বেশির ভাগ বনভূমি বেদখল হয়ে যাবে।ফলে চরম বিপর্যয়ের আশংকা করছেন অভিজ্ঞরা।গাছ উজাড় হলে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে; অসময়ে বৃষ্টি-বাদল ও বন্যা দেখা দেবে।রাঙামাটির রাজস্থলী থেকে প্রতিদিন বনের কাঠ বিভিন্ন স্থানে চালান হয়ে যাচ্ছে। গাছের দাম ভালো পাচ্ছেন বলে গ্রামাঞ্চলের অনেক গরিব মানুষ তাঁদের গাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন।বনজ দ্রব্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০১১ অনুযায়ী, ব্যক্তিমালিকানার বাগান থেকে গাছ কাটতেও বন বিভাগের অনুমতি লাগে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বার বার বিপর্যয়ে পড়া বনাঞ্চল প্রকৃতির হাত থেকে রেহাই পেলেও কিছু অসাধু বনরক্ষক আর স্বার্থলোভী কাঠ চোরের হিংস্র থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না পার্বত্য রাজস্থলীর জীব বৈচিত্র। পার্বত্য অঞ্চল লোপাট করে সুন্দরী, আকাশমনি, গামার, সেগুন সহ অবৈধ কাঠ পাচার চলছে।
প্রতিদিন গাছ সংগ্রহের জন্য গ্রামে গ্রামে দালাল নিয়োগ করে তাঁদের মাধ্যমে সামাজিক বনায়ন ও ব্যক্তিমালিকানার গাছ কিনে তা কেটে প্রথমে বিভিন্ন সড়কের পাশে জড়ো করেন। বিশেষ করে রাঙুনিয়ার কোদালা শিলকের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এসব কাঠ কিনে মিনি ট্রাক কিংবা চাঁদের গাড়ী ( জীপ গাড়ী) করে নিয়ে যাচ্ছেন। বন বাগানে কাঠ চুরির মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতীর কাঠ কাটা হচ্ছে।পরিমান কাঠ পাচার ও ইটভাটায় কাঠ পুড়ছে তাতে দেশে সরকার আছে বলে মনে হয় না।জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করছে বন মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনডিপি। ১৯৪৭ থেকে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অঞ্চলভিত্তিক বন বিভাগ ছিল বনরক্ষক-এর অধীনে, এবং পরবর্তিতে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রধান বনরক্ষকের অধীনে ছিল। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেলে সংরক্ষিত ও প্রস্তাবিত সংরক্ষিত বনগুলো বাংলাদেশ বন বিভাগের আওতাধীন হয়ে যায়। ১৯৭১ থেকে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশ বন বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন ছিল।
কতিপয় কাঠচোর বন বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন কাঠ নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামজেলার রাঙ্গুনিয়ার কোদালা, শিলক সরভভাটা এলাকায়।কাঠ পাচারকারীদের সঙ্গে বনকর্মীদের নিবিড় সখ্যতায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ পাচার হচ্ছে প্রকাশ্যে।বন বিভাগ দেখেও না দেখার ভান করছে। এতে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব।
চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেড অবৈধ ভাবে সরকারী বনাঞ্চলের বন বাগান উজার করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রাতেই পাচারকারীদের কাঠ পাঁচারের প্রধান মুহুত্ব হিসেবে ঠিক করে নিয়েছে। বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে বোঝাইকৃত অবৈধ কাঠের গাড়ীর উপরি ভাগে কলাসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বোঝায় করে প্রশাসনের চোখে ধুলা দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে সংঘবদ্ধ চক্রটি। দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষ সংরক্ষিত বনাঞ্চলে জুম চাষের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় বন উজাড় করা হচ্ছে। রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী, কাপ্তাই রাইখালীর পরীক্ষন ফাড়ী গুলো দিয়ে অবাধে কাঠ পাচার হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় সময় সভা সমাবেশে বক্তব্য কালে প্রায় সময় বলেন, “ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, শিল্পায়ন, কৃষি সম্প্রসারণ ও নগরায়নের ফলে বিশ্বব্যাপী বন ও বনভূমি হ্রাস পাচ্ছে। আমি দেশের বন রক্ষার জন্য সরকারের পাশাপাশি জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।”
কাঠ পাচার রোধে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই বন ভূমি উজাড় হয়ে পড়বে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় পার্বত্য অঞ্চলের চেয়ে বড় বন্ধু আর নেই আমাদের। তাই পার্বত্য বন সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। নির্বিকারে বৃক্ষ নিধন বনাঞ্চল কে শুধু মরু ভূমিতেই পরিণত করবে না পার্বত্য অঞ্চলের অস্থিত্ব বিলীন হবে।এ বিষয়ে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত কাঠ জব্দ করি। পাচারকারীরা বিভিন্ন চক্র তৈরী করে কাঠ পাচার করে। কাঠ পাচার রোধ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙামাটির কাপ্তাই বনবিভাগের আওতাধীন কামিলাছড়ি বিট এলাকায় দখল হওয়া প্রায় ৫ একর সরকারি বনবিভাগের জ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : পার্বত্য এলাকায় যে উন্নয়নের ধারা বয়ে চলেছে সেটি আগামীতেও আরো উন্নতি হতে হলে শেখ হাসিনা ছাড়া কোন বি...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : পার্বত্য বান্দরবানে কএনএফ সন্ত্রাসীদের হাতে দুই ব্যক্তি অপহরণের শিকার হয়েছে। অপহৃতদের মধ্যে এক...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, দেশের উন্নয়নের জন...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম তুইচুই মৌজার লংথিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পর্যটন জেলা বান্দরবান পৌরসভায় বসবাস করছে অসংখ্য মানুষ। তবে পর্যটন শহর হলেও ব...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © 2023 CHTtimes24 | Developed By Muktodhara Technology Limited