নারীর প্রতি সহিংসতা দূরীকরণ দিবস উপলক্ষে নানা আয়োজন


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ১১:১২ পিএম, ২০২০-১১-২৫

নারীর প্রতি সহিংসতা দূরীকরণ দিবস উপলক্ষে নানা আয়োজন

রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা উইমেন্স এডুকেশন ফর এডভান্সমেন্ট এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট (উইভ) এনজিও এর উদ্যোগে  ‘‘নারীর প্রতি সহিংসতা দূরীকরণ দিবস-২০ইং উপলক্ষে ওমেন’স ভয়েস এন্ড লিডারসীপ- বাংলাদেশ প্রকল্প এবং ওমেন’স এমপাওয়ারমেন্ট কর্মসূচির আওতায় ‘‘কমলা রঙের বিশে^ নারী, বাধার পথ দেবেই পাড়ি’’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কাউখালী উপজেলায় র‌্যালী, আলোচনা সভা ও মঞ্চ নাটক অনুষ্ঠিত  হয়েছে।
বুধবার (২৫ নভেম্বর ২০) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি কাউখালী উপজেলার অডিটোরিয়ামের সম্মেলন কক্ষে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), উইমেন রিসোর্স নেটওয়াক ও নারী প্রগতি সংঘ’র এর অর্থায়নে এবং উইমেন্স এডুকেশন ফর এডভান্সমেন্ট এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট (উইভ) ও এর উদ্যোগে ও বাস্তবায়নে এ র‌্যালী, আলোচনা সভা ও মঞ্চ নাটক অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় কাউখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শতরুপা তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ‘‘নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন’’ শীর্ষক প্রকল্পের সমন্বয়ক ফল্লরা চাকমা’র সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সামশু দোহা চৌধুরী।
এছাড়াও বিশেষ অথিতি হিসেবে, কাউখালী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিবাইউ মারমা, উইমেন্স এডুকেশন ফর এডভান্সমেন্ট এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট (উইভ)’র নির্বাহী কর্মকর্তা নাই উ প্রু মারমা মেরী প্রমুখ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও আয়োজিত সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।


এসময় প্রধান অতিথি  জানান, সমাজের প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া নারী সহিংসতা বন্ধে শুধু সরকারের উপর দায়িত্ব দিয়ে দিলেই হবে না। প্রয়োজন সকলের আন্তরিক সহযোগিতা। কারণ সকলের সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ ছাড়া সরকারের একার পক্ষে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তিনি আরো জানান, “নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিত চেষ্টা করতে হবে। এজন্য পাঁচটি ফেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ- প্রথমত সরকারের সকল পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা, দ্বিতীয়ত জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানো, তৃতীয়ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে তথ্য ও সহযোগিতা প্রদান, চতুর্থত সুশীল সমাজের অন্তর্ভুক্তিকরণ যারা সমাজের কথাগুলোকে তোলে ধরেন এবং পঞ্চমত শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও সমাজে প্রভাবশালী ব্যক্তির সক্রিয় ভূমিকা পালন।”


এসময় উইমেন্স এডুকেশন ফর এডভান্সমেন্ট এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট (উইভ)’র নির্বাহী কর্মকর্তা নাই উ প্রু মারমা মেরী বলেন, “প্রত্যেক জায়গায় নারীদের নিজের উপর নিজের সাহস রাখতে হবে। নারীসহ সকলকে সচেতন করতে হবে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীর নিজের কোনো দোষ নয়, বরং নির্যাতনকারীই এর জন্য দোষী। সবাইকে একত্রিত করে চিন্তা ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের মাধ্যমে নারী প্রতি নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হবে।” “আমরা চাই আর কোনো নারী যাতে নির্যাতনের শিকার না হয়।” নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সকলের পাশাপাশি করপোরেট সেক্টরকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।


এছাড়াও বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতাগুলোর চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরা হয় এবং এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য উপায় খুঁজে বের করতে আলোচনা হয়।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের লক্ষ্যকে চ্যালেঞ্জ করে প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা দূরীকরণের দিবস থেকে শুরু করে ১০ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পর্যস্ত ‘১৬ দিনব্যাপী নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ’ ক্যাম্পেইনটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদযাপন করা হয়। ১৯৯১ সাল থেকে প্রায় ১৮৭টি দেশের ৬০০০ এরও বেশি সংস্থা এই প্রচারে অংশ নিয়ে আসছে।