পর্যটকদের পদচারনায় মুখর রাঙামাটির স্পটগুলো


আলমগীর মানিক    |    ০৩:৪১ এএম, ২০২৪-০৬-২০

পর্যটকদের পদচারনায় মুখর রাঙামাটির স্পটগুলো

আলমগীর মানিক

প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি পাহাড়ি জনপদ রূপ বদলানো হ্রদ-পাহাড় আর মেঘ মিতালীর অপরূপ নান্দনিক দৃশ্য দেখার টানে রূপের রানী রাঙামাটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানাছুটির অবসরে নগর জীবনের কোলাহল থেকে খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা ইট পাথরের শহর ছেড়ে হ্রদ-পাহাড়ের শহরে দেশের বিভিন্ন্ স্থান থেকে ছুটে আসছে রাঙামাটিতে। 

পর্যটকদের জন্য মনোমুগ্ধকর কাপ্তাই হ্রদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায় হ্রদের ধারে দুই পাহাড়ের মাঝখানে স্থাপিত আর্কষণীয় ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, পুলিশ পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো, বার্গী লেক ভ্যালি, রাজবন বিহার, কাপ্তাই নিসর্গ পড হাউজ, বাঘাইছড়ির সাজেক কিংবা আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে আসছেন পর্যটকরা।

গত কয়েকদিনে রাঙামাটিতে অন্তত ৫০ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। হোটেল মোটেল ও সরকারি বিশ্রামাগারগুলোতে দেখা গেছে পর্যটকে ঠাসা। রাঙামাটির বিখ্যাত ঝুলন্ত সেতু,পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো এলাকায় পর্যটকদের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে গেছে। শহরের পর্যটন স্পটগুলো এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। পর্যটকের আগমনে প্রতি দিনই রাঙামাটির অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। 

পর্যটকরা বলছেন, প্রকৃতির এমন রূপ দেখে তাদের তৃষ্ণা মিটে না। তাইতো ছুটি পেলে বারবার ছুটে আসেন মায়াবী রূপের এ শহরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা জানিয়েছেন, প্রকৃতির রূপ কতো সুন্দর হয় সেটি রাঙামাটিতে বেড়াতে না আসলে বুঝতে পারতাম না। দেশে এত সুন্দর জায়গা আছে এখানে না এলে জানতাম না। তাই মনকে সতেজ রাখতে পাহাড়ি জনপদে ছুটে এসেছি। খুব ভাল লাগছে রাঙামাটি।

এদিকে রাঙামাটির পর্যটনের উন্নয়নে এ শহরকে আরও বেশি ঢেলে সাজানো উচিত। তাহলে মানুষ বিদেশে বেড়াতে না গিয়ে এ শহরে বেড়াতে আসবে বলেও জানিয়েছেন পর্যটকরা। 

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানিয়েছেন, টানাছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে। কয়েকদিনে জেলায় আশানুরূপ পর্যটকের সমাগম হয়েছে মন্তব্য করে তিনি জানান, পর্যটন মোটেলগুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে। খুব ভাল লাগছে পর্যটকদের উপস্থিতিতি বেড়ে যাওয়ায়। 

এদিকে, রাঙামাটিতে আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, ট্যুরিষ্ট পুলিশ রাঙামাটি রিজিয়নের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সুপার মহিউল ইসলাম। তিনি বলেন, শহরকেন্দ্রিক পর্যটন স্পটগুলোতে পোশাকদারি পুলিশের নিয়মিত টহল ডিউটি, কাপ্তাই হ্রদের বোটের ঘাটগুলোতে ষ্ট্যার্ন্ডিং ডিউটিসহ এক স্পট থেকে আরেক স্পটে মোটর সাইকেল ডিউটি থাকবে। 

অপরদিকে, রাঙামাটির পর্যটন খাতকে আরো ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক। সম্প্রতি তিনি রাঙামাটি সফরে এসে অত্রাঞ্চলের পর্যটন সেক্টরের সাথে জড়িত বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক করেছেন।

এসময় তিনি জানান, পর্যটন কর্পোরেশন জাতির পিতার হাতে গড়া একটি প্রতিষ্ঠান, এটাকে অবহেলিত রাখতে চাইনা। তাই পর্যটন শিল্পের বিকাশে রাঙামাটি একটি নৈসর্গিক জেলা। এখানকার ঝুলন্ত ব্রীজটিকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে সংস্কার, সুইমিং পুল স্থাপন, পাবলিক টয়লেট নির্মাণসহ অত্রাঞ্চলের পর্যটন সেক্টরকে ঢেলে সাজানো হবে।