পাহাড়ের চারণ সাংবাদিক মকছুদ আহমেদকে সম্মাননা দিলো বসুন্ধরাগ্রুপ


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০২:৪৪ পিএম, ২০২২-০৫-৩১

পাহাড়ের চারণ সাংবাদিক মকছুদ আহমেদকে সম্মাননা দিলো বসুন্ধরাগ্রুপ

‘শেষ বয়সে এসে এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। এই প্রাপ্তি আমার ৫২ বছরের সাংবাদিকতার জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছে।’ এই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন রাঙামাটি জেলার প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম মকছুদ আহমেদ।

রবিবার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) 'বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১'-এ খ্যাতিমান সাংবাদিক হিসেবে এ কে এম মকছুদ আহমেদ রাঙামাটি জেলা থেকে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন।

প্রবীণ এ সাংবাদিক তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘জীবনে অনেক প্রোগ্রামে গেছি। অনেক পুরষ্কার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছি। কিন্তু জীবনের এই শেষ সময়ে এসে বসুন্ধরা গ্রুপ যেভাবে আমাদের সম্মানিত করল, তা সত্যিই বিরল।’

এ কে এম মকছুদ আহমেদ বলেন, ‘জীবনের সব পাওয়া না পাওয়া এই সম্মাননার মাধ্যমে পূরণ হয়ে গেছে। আর কোনো পাওয়ার নেই এই শেষ সময়ে। তবে খুব করে চাইব যেন এই আয়োজনটা সব সময় চালু রাখা হয়।’

বিশেষ সম্মাননা পাওয়া কুষ্টিয়া জেলার আরেক প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুর রশিদ চৌধুরী তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন ঢাকাটাইমসের কাছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মফস্বলের সাংবাদিকদের বসুন্ধরা গ্রুপ যে সম্মাননা দিল, তা সত্যিই বিরল।’

আব্দুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের ৬৪ জেলার সাংবাদিকদের সম্মাননা দেওয়ার মাধ্যমে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রমাণ করে দিলো যে তারা সম্মান দিতে জানে। আমরা মফস্বলের সাংবাদিকরাও যে গুরুত্বপূর্ণ তা-ই প্রমাণ হল এই সম্মাননার মাধ্যমে। যা আমার ৫০ বছর সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত। অন্যান্য বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিও আমার আবেদন থাকবে তারাও যেন এমন আয়োজন করেন।’

দেশে প্রথমবারের মতো মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করেছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। জমকালো আয়োজনে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় দেশের বহুল আলোচিত এই অ্যাওয়ার্ডে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হচ্ছে ১১ জনকে। এছাড়া মফস্বলে সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখায় প্রতিটি জেলা থেকে একজন করে মোট ৬৪ জন গুণী সাংবাদিককে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা।

বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ পাচ্ছেন ১১ জন অনুসন্ধানী সাংবাদিক। এ উপলক্ষে গুণী সাংবাদিকদের বিশেষ সম্মাননা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে বসুন্ধরা গ্রুপ। গুণী সাংবাদিকদের দেওয়া হবে নগদ অর্থ, সম্মাননা স্মারক এবং উত্তরীয়।

৬৪ জন সাংবাদিকের মধ্যে ঢাকা বিভাগ থেকে যারা:

ঢাকা জেলার মো. শফিক চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের হাফিজুর রহমান মিন্টু, মুন্সিগঞ্জের রশীদ আহমদ, নরসিংদীর নিবারণ চন্দ্র রায়, কিশোরগঞ্জের সুবীর বসাক, মানিকগঞ্জের সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু, রাজবাড়ির মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, গোপালগঞ্জের রবীন্দ্র নাথ অধিকারী, ফরিদপুরের এসএম তমিজ উদ্দিন, মাদারিপুরের মো. শাহজাহান খান, শরিয়তপুরের আব্দুস সামাদ তালুকদার, টাঙ্গাইলের দুর্লভ বিশ্বাস ও গাজীপুরের মো. নজরুল ইসলাম বাদামী।

রাজশাহী বিভাগের আটজন:রাজশাহীর মো. তৈয়বুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোঃ তসলিম উদ্দিন, নাটোরের এসএম মনজুর উল হাসান, পাবনার রণেশ মৈত্র, সিরাজগঞ্জের রফিকুল আলম খান, জয়পুরহাটের আছাদুল ইসলাম আসাদ, নওগাঁর মোঃ নবির উদ্দীন ও বগুড়ার এএসএম খবিরুল হক (সমুদ্র হক)।

রংপুর বিভাগের গুণী সাংবাদিকরা হলেন: লালমনিরহাটের এসএম শফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের মো. শাহাবুদ্দিন, ঠাকুরগাওঁয়ের মো. আব্দুল লতিফ, রংপুরের সদরুল আলম দুলু, পঞ্চগড়ের আমীর খসরু লাবলু, দিনাজপুরের চিত্ত ঘোষ, নীলফামারীর মো. শামসুল ইসলাম ও গাইবান্ধার গোবিন্দলাল দাস।

ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে যারা: জামালপুরের এ এ কে মাহমুদুল হাসান দারা, ময়মনসিংহের আব্দুর রাজ্জাক, নেত্রকোনার মো. আব্দুস সালাম ও শেরপুরের সুশীল মালাকার।

খুলনার বিভাগ থেকে: বাগেরহাটের এ.বি.এম. মোশাররফ হুসাইন, চুয়াডাঙ্গার মো. কামরুল আরেফিন, যশোরের অধ্যাপক মসিউল আযম, ঝিনাইদহের বিমল কুমার সাহা, মাগুরার ফারুক আহমদ, খুলনার কাজী মোতাহার রহমান, সাতক্ষীরার চৌধুরী সুভাষ চন্দ্র, নড়াইলের ভক্ত সরকার, মেহেরপুরের তোজাম্মেল আযম ও কুষ্টিয়ার আবদুর রশীদ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম বিভাগের গুণী সাংবাদিকরা হলেন: চট্টগ্রাম জেলা থেকে নাছির উদ্দিন চৌধুরী, কুমিল্লার আবুল হাসানাত বাবুল, ফেনীর ওছমান হারুন মাহমুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোঃ আরজু মিয়া, রাঙ্গামাটির এ কে এম মকছুদ আহমেদ, নোয়াখালীর একেএম জুবায়ের, চাঁদপুরের গোলাম কিবরিয়া, লক্ষীপুরের হোসাইন আহমেদ হেলাল, কক্সবাজারের প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, খাগড়াছড়ির তরুণ কুমার ভট্টাচার্য ও বান্দরবানের প্রিয়দর্শী বড়ুয়া।

বরিশাল বিভাগ থেকে: বরিশাল জেলার মানবেন্দ্র বটব্যাল, ঝালকাঠির মানিক রায়, পটুয়াখালীর আমিরুল ইসলাম, পিরোজপুরের মাহমুদ হোসেন শুকুর, ভোলার এম. হাবিবুর রহমান ও বরগুনার চিত্তরঞ্জন শীল।

সিলেট বিভাগ থেকে: সিলেট জেলার আব্দুল মালিক চৌধুরী, মৌলভীবাজারের আহমদ সিরাজ, হবিগঞ্জের চৌধুরী ফজলে নূর ইসমত ও সুনামগঞ্জের মো. ইকবাল হোসেন কাগজী।

ইতোমধ্যে গুণীজন সাংবাদিকরা সারাদেশ থেকে এসে ঢাকায় অবস্থান করছেন। প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিকদের ঘিরে অন্যরকম আয়োজনের সাক্ষী হচ্ছে আইসিসিবি। পুরো অনুষ্ঠানটি রূপ নিয়েছে প্রবীণ ও নবীন সাংবাদিকদের মিলনমেলায়।