বান্দরবান পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা


নুরুল কবির    |    ০১:৫১ পিএম, ২০২১-১২-০৩

বান্দরবান পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে র‌্যালি  ও আলোচনা সভা

বান্দরবানে নানা আয়োজনে পার্বত্য শান্তিচুক্তির দুই যুগপূর্তি পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন চত্বর থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা।

শোভাযাত্রায় পাহাড়ের ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

পরে স্থানীয় রাজারমাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় বান্দরবান-৬৯ সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল হক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির হিসাবে  বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার জেরিন আখতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. অংসুইপ্রু মারমা, জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর ।

পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেছেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেন। এরপর থেকে সরকার জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সাথে করা চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়ন শুরু করে। বিগত সময়ে চুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন করেছে, অবশিষ্টগুলো বাস্তবায়ন চলমান। ক্যশৈহ্লা বলেন, পাহাড়ে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা। তাহলেই পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।’
ক্যশৈহ্লা আরও বলেন, উন্নয়নের পূর্বশর্ত শান্তি, পাহাড়ের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। তবে এর জন্য প্রয়োজন শান্তি-শৃঙ্খলা। পাহাড়ে বিভিন্ন গোষ্ঠি নানা ষড়যন্ত্র করছে, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি, গুম-খুন এবং অপহরণের মত ঘটনা ঘটিয়ে পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে যাচ্ছে, এটা শান্তিকামী মানুষের কাম্য নয়। সাধারণ মানুষ চায় উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধ পার্বত্য চট্টগ্রাম। শান্তি চুক্তির পরও পাহাড়ে কুচক্রি মহল নানা অপতৎপরতা অব্যাহত রাখছে-এমন বিশৃঙ্খলা থাকলে উন্নয়ন ব্যহত হবে। তাই যেকোনো অপশক্তিকে আইনগতভাবে মোকাবেলা করে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বিরাজ করলেই শান্তিচুক্তি সত্যিকার অর্থে সফল হবে।

প্রধান অতিথি ছিলেন সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন ও ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনালের মো. জিয়াউল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর এখানে উন্নয়নের যে ধারা শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে সকলের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। পাহাড়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যারা সৃষ্টির চেষ্টা করবেন- তাদের আইনগতভাবে মোকাবেলা করে পাহাড়ি শান্তি ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ৫০০ গরিব-অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক পাহাড়ি-বাঙালি নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, নাইক্ষ্যংছড়িতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৪তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শোভাযাত্রা আলোচনা সভা ও হত দরিদ্র শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। 

ব্যাটালিয়নের ট্রেনিং সেন্টারে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটেলিয়নের জোন কমন্ডার লে.কর্ণেল মো: নাহিদ হেসেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাটেলিয়নের উপ অধিনায়ক (মেজর) কাজী আহাদুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থি ছিলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মংলা ওয়াই মার্মা, বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মো: আলম, দোছড়ি ইউপি নব-নিবাচিত চেয়ারম্যান মো: ইমরান ।