পাহাড়ে অপরিকল্পিত জুম চাষে প্রাকৃতিক বন উজাড়সহ বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণীরা 


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০১:৫৩ এএম, ২০২০-১২-০১

পাহাড়ে অপরিকল্পিত জুম চাষে প্রাকৃতিক বন উজাড়সহ বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণীরা 

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রভাবের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি ও খরার প্রাদুর্ভাবের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পানিসম্পদ বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এনেক্স ভবনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং স্থানীয় একটি এনজিওর উদ্যোগে ”জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে পার্বত্য এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়ন” বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে তিনি একথা বলেন।

চেয়ারম্যান বলেন, এ অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শুকনো মৌসুমে খরার সময় পাহাড় শুকিয়ে যাওয়ার ফলে আবাদি জমি অনাবাদিতে পরিণত হচ্ছে। পানিজনিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও কৃষি জমিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার, পাহাড়ের গাছপালা কেটে ফেলা ও সমতল জমিতে তামাক চাষ, ঝিরি/ছড়া থেকে পাথর উত্তোলন, পরিবেশ বান্ধব নয় এমন গাছ লাগানো ইত্যাদির কারণে ধীরে ধীরে পাহাড়ে পানির প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পানির প্রাপ্যত্য কমে যাওয়ায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর খাওয়া, গোসল, কাপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে। অপরিকল্পিত জুম চাষের ফলে প্রাকৃতিক বন যেমন উজাড় হচ্ছে তেমনি বন্যপ্রাণীও প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই জুম কাটার সময় ছড়া/ঝিরির আশেপাশে কম করে হলেও ২০-৩০ মিটার বন সংরক্ষণ ও সুরক্ষিত রাখা এবং এলাকাভিত্তিক সামাজিক বনায়ন সৃষ্টি করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।

স্থানীয় এনজিও হিল ফ্লাওয়ার এর নির্বাহী পরিচালক নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুজ্জামান মহসীন, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা উপমা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় এর সহকারী অধ্যাপক ড. নিখিল চাকমা,  জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বরুন কুমার দত্ত, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নীতিশ চাকমা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আপু মারমা, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, রাঙ্গামাটি সহকারী বন সংরক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাসনে আরা বেগম, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ প্রিমা মহাজন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এর সহকারী পরিচালক বিশ^জিৎ চাকমা, ভাইজ্যাতলী মৌজার হেডম্যান থোয়াই অং মারমা, বিলাইছড়ি হেডম্যান শান্তি বিজয় চাকমা, বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান বরুন বিকাশ চাকমা ও প্রকল্পের বিভিন্ন গ্রাম কমিটির উপকারভোগী সদস্যবৃন্দ।