রাঙামাটি শহরে একাধিক চুরির ঘটনায় লাল ফিতার বিশেষ চিহ্নে উৎকন্ঠিত স্থানীয়রা


শহিদুল ইসলাম হৃদয়    |    ০২:৩৯ এএম, ২০২০-১১-২২

রাঙামাটি শহরে একাধিক চুরির ঘটনায় লাল ফিতার বিশেষ চিহ্নে উৎকন্ঠিত স্থানীয়রা

পার্বত্য রাঙামাটি শহরে আকস্মিকভাবেই বেড়েছে বসত বাড়িতে চুরির ঘটনা। শহরের পুরাতন হাসপাতাল এলাকায়ই গত একমাসের ব্যবধানে সংগঠিত হয়েছে একাধিক চুরির ঘটনা। চোর চক্র এসব ঘটনায় স্বর্ণালংকার থেকে শুরু করে মূল্যবান কাগজপত্রাদিসহ গৃহস্থালি জিনিসপত্র নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ধারাবাহিক এই চুরির ঘটনার সাথে এলাকার স্থানীয় একটি চক্র জড়িত রয়েছে। তাদের দেওয়ার সুনির্দিষ্ট্য তথ্যের ভিত্তিতেই চুরির ঘটনাগুলো ঘটনো হচ্ছে। ঘরে কেউ নাথাকার সুযোগের জন্য উত পেতে থাকে চক্রটি এবং কোনো সাড়া শব্দ ছাড়ায় তাৎক্ষনিক চুপি চুপি তাদের কাজ সম্পাদন করে ঘটনা স্থল থেকে কেটে পরে বলেও জানিয়েছন তারা।

যদিও বা চক্রটি ধারাবাহিক ভাবে চুরির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কিন্তু অনেক সময় ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চিহ্ন রেখে যায় বলেও নিশ্চিত করেছেন পুরাতন হাসপাতাল এলাকায় চোর চক্রটির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়া ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। এদিকে এসব চুরির ঘটনাগুলোর সংগঠিত করার পর লাল ফিতা দিয়ে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে যাচ্ছে চোর চক্রের সদস্যরা। আতঙ্ক ছড়ানোর পাশাপাশি ধারাবাহিকতা রক্ষার লক্ষ্যেই এমনটি করা হচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারনা। 

সম্প্রতি ২নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস চৌধুরী রকির নিজ বাসা থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা সহ প্রায় সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে যার বাজার মূল্য  আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকার। তিনি জানান, (১৫ নভেম্বর) সকালে আমি আমার পরিবার নিয়ে ভ্রমণের উদেশ্য কক্সবাজার যাই এবং ভ্রমন শেষ করে (১৮ নভেম্বর) নিজ বাসভবনে এসে দেখি আলমারি ভেঙ্গে আমার স্ত্রী’র সব গয়না চোরে নিয়ে গেছে। সাথে সাথে বিষয়টি কোতয়ালী থানাকে অবগত করি এবং অভিযোগও দায়ের করি। আমার স্ত্রীর স্বর্ণের সরঞ্জাম গুলোর মধ্যে ছিলো হাতের বালা, গলার চেইন, কানের দুল বাবদ হিসাব করে আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকার মত স্বর্ণ চুরি হয়েছে। এছাড়াও নগদ ১৫ হাজার টাকা এবং কিছু নতুন কাপড় ও আমার স্ত্রীর বিয়ের কাপড় পর্যন্ত নিয়ে গেছে চোরেরা। 

এদিকে, রাঙামাটি সদর উপজেলার সেনেটারী ইন্সপেক্টর মোছাম্মদ নাছিমা আক্তার খানমের বাসায়ও চুরি ঘটিয়েছে চোর চক্র।  তিনি জানান. আমার বাসায় বেশ কয়েকবার চোর ঢুকেছে প্রথম বার (১৪ অক্টোবর) আমি সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে অফিসে যাই এবং অফিস শেষ করে ১ টা ৩০ মিনিটে বাসায় এসে দেখি ঘরের বেড়া কেটে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভঙ্গে নগদ ৬২ হাজার টাকা ও দুই আনার মত কানের এক জোড়া দুল ছিলো সেগুলো নিয়ে গেছে। আমি সাথে-সাথে কোতয়ালী থানায় কল করে বিষয়টি জানিয়েছি এবং অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে একটি মামলাও দায়ের করি। পরেরবার চোর ঢুকেছে আমি যখন চাকরির ছুটিতে চট্টগ্রাম যাই এবং প্রথম চুরির ১৩ থেকে ১৪ দিনের মাথায়। সেসময় পুরো ঘর খুঁজে কিছু না পেয়ে আমার জাতীয় পরিচয়পত্র (ন্যাশনাল আইডি কার্ড) কেটে দিয়ে যাই। এর সপ্তাহ খানিকের মধ্যে আমার ঘরের জানালায় একটি লাল ফিতা দেখে আমার মনে ভয় সৃষ্টি হলে আমি সে বিষয়টিও কোতয়ালী থানায় জানিয়ে রাখি।

অপরদিকে, একই এলাকার বাসিন্দা শাহিদা আক্তার বাসায় না থাকার সুযোগ নিয়ে (২ নভেম্বর) ১ ঘন্টার মধ্যেই চোর ঘরে ঢুকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও নতুন কাপড় নিয়ে যাই। এলাকার অন্য আরেক বাসিন্দা চিড়াই কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ নুরুচ্ছফা(১ নভেম্বর) দেশের বাড়িতে গেলে (৮ নভেম্বর) রাঙামাটির পুরাতন হাসপাতাল এলাকার বাসায় এসে দেখে তার রান্না ঘরের জানালা ভেঙ্গে রান্নার কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় সব সরঞ্জাম নিয়ে গেছে। 

এদিকে বিষয়গুলোর প্রায় সবগুলোই নিজেদের নজরে এসেছে জানিয়ে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন জানিয়েছেন, আমরা লিখিত অভিযোগগুলোর আলোকে বিভিন্নভাবে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশাকরছি এসব অপকর্মের সাথে জড়িতদের আমরা ধরতে সক্ষম হবো শীঘ্রই।