পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়াসহ পার্বত্যাঞ্চলের সকল গণহত্যার বিচার দাবি পিসিএনপির


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০৪:৪৭ পিএম, ২০২৪-০৯-০৯

পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়াসহ পার্বত্যাঞ্চলের সকল গণহত্যার বিচার দাবি পিসিএনপির

১৯৯৬ সালে রাঙামাটির লংগদুতে সংগঠিত ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকান্ড সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল গণহত্যার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখা। 

আজ ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে রাঙামাটি ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ার ইনিস্টিউট মিলনায়তনে আয়োজিত  আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি শাব্বির আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পিসিএনপি রাঙ্গামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান। 

বক্তারা বলেন, মানবাধিকার এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ে সকল বাঙালি গণহত্যাকান্ডের তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। অন্যথায় পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনোদিনই সফল হবে না। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও সম্প্রীতি রক্ষায় সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারী ও দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যার দায়ে খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসা সহ তাদের সংগঠনের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূল শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

পিসিএনপি রাঙামাটি সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোরশেদা আক্তার, রাঙ্গামাটি পৌর সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম, পৌর সাধারণ সম্পাদক হিরো তালুকদার, সদর উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মোমিন, সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা আরো বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস’র সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্য বর্বরোচিত, নারকীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে পাবর্ত্য অঞ্চলের বাঙালিরা। অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আজ পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যা দিন, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস।

১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পিসিজেএসএস এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী কর্তৃক রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াদের ওপর নিমর্ম নিযার্তনের পর হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বীভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম জিঘাংসার স্বরূপ উন্মোচন করে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যার দিন। এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তি বাহিনী।

তাদের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশের নিমর্ম দৃশ্য দেখে সেদিন শোকে ভারী হয়ে ওঠেছিল পরিবেশ। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল সেদিন অসহায় ওই মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিবাহিনী।

আলোচনা সভা শেষে পিসিএনপি রাঙ্গামাটি  জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মোঃ আবু বক্কর এর পরিচালনায় নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।