রাঙামাটিতে কোটা’র পক্ষের মিছিল পন্ড;আহত-১;রামেক ছাত্রলীগে পদত্যাগের হিড়িক


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০৭:২৫ পিএম, ২০২৪-০৭-১৮

রাঙামাটিতে কোটা’র পক্ষের মিছিল পন্ড;আহত-১;রামেক ছাত্রলীগে পদত্যাগের হিড়িক

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রাঙামাটিতে ইসলামী আন্দোলন ও ছাত্র সমাজের কর্মসূচী পন্ড করে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের প্রেসক্লাব ও উন্নয়ন বোর্ড এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতির সময় ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী অতর্কিতভাবে হামলা করে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরকে শারিরিকভাবে লাঞ্চিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির রাঙামাটি জেলার সেক্রেটারি নুর হোসেন।

তিনি জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার সময় ইসলামী আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিনের পরিচালনাধীন হোটেল রাজমহলে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এসময় ক্ষমতাসীনদলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে মারধর করে মোবাইল, ব্যানার ও সিসিটিভি ফুটেজ ধারনকরা পিসি খুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মোবাইলটি ফেরত দিলেও পিসিটি সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেরৎ দেয়নি বলে জানান। এদিকে ঘটনার পরপরই কোতয়ালী থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন।

খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সেলিম উল্লাহ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজলসহ আ’লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে সরিয়ে নিয়ে আসেন তারা। এদিকে এরআগে বিকেল তিনটার সময় রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সামনে কয়েকজন যুবক জড়ো হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় হামলায় রিফাত নামের এক ছাত্র রক্তাত্ব হয়ে আহত হয়। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আহত রিফাত সদর থানা ছাত্রলীগের এক নেতার ভাগিনা। সে ছাত্র সমাজের ব্যানারে কোটা বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে মিছিল করতে এসেছিলো এমন অভিযোগে তাকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এদিকে, রাঙামাটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি থেকে পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে। সম্প্রতি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের ২৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণার কদিন পরেই কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে তাতে সম্পৃক্ত হয়ে কর্মসূচি পালন করে কলেজটির শিক্ষার্থীরা।

তাদের একটি কর্মসূচিতে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী নয়, এমন বাহিরে থেকে যাওয়া ছাত্রলীগ কর্মীরা বাধা প্রদান ও দুর্ব্যবহার করার অভিযোগও ওঠে। এরই মধ্যে গত তিনদিন সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মারধর ও সহিংসার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে একের পর এক ছাত্রলীগ নেতা সংগঠন ছাড়ার ঘোষণা দিতে থাকেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পর্যন্ত ৬ ছাত্রলীগ নেতা কোটা সংস্কার ইস্যুতে ছাত্রলীগের ভূমিকায় ব্যথিত হয়ে এবং একজন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। এরা সবাই দায়িত্বশীল পদেই ছিলেন। পদত্যাগকৃতরা হলেন, সহসভাপতি ক্যাচিংনু মারমা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রাঙ্গণ মল্লিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপ্ত দে, সাংগঠনিক সম্পাদক সৃজন দে, সাংগঠনিক সম্পাদক কমল ত্রিপুরা, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াদুল হক।

এসকল খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে বিজিবির ষ্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্যদের নিয়ে রাঙামাটি শহরে টহল দিতে দেখা গেছে। পুরো রাঙামাটি শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।