আলমগীর মানিক | ০৩:২৪ পিএম, ২০২৩-০৯-১৭
আলমগীর মানিক
রাঙামাটি সদরের রিজার্ভ বাজারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস শুক্কুর স্টেডিয়ামে নিয়ম বহির্ভুতভাবে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মানের নামে অনিয়মের বিষয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও জাতির পিতার পরিবার একই আত্মা মন্তব্য করে মন্ত্রী জানিয়েছেন রাঙামাটি সদরে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও জানান তিনি। সম্প্রতি রাঙামাটির তিনটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাঙামাটি সদরে শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়াম কাগজে কলমে স্থাপন দেখানো হয়েছে এবং সরকারের বিধি উপেক্ষা করে রাঙামাটির প্রথম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শুক্কুরের নামের উপর ওভারলেপিং করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম স্থাপন দেখানো হয়েছে। বস্তুত রাঙামাটি সদরের কোথাও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম এর নাম ফলক বা স্টেডিয়াম নেই? বিষয়টি উল্লেখ করে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখবো। যদি এই ধরনের কোনো কিছু থেকে থাকে তাহলে আমরা বিকল্প কোথাও আমরা স্টেডিয়ামের ব্যবস্থা করার চেষ্ঠা করবো। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার আহবানে মুক্তিযোদ্ধে যারা জীবন দিয়েছেন শাহাদাৎ বরণ করেছেন তারাও যেমন আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, ঠিক তেমনি আবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরাও আমাদের অংকারের জায়গা, যারা এই দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের মাঝে কোনো ধরনের দ্বন্ধ হোক সেটা আমরা কখনোই চাইনা। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনানুসারে বিকল্প জায়গা দেখার চেষ্ঠা করবো।
যেহেতু আমি রাঙামাটি সদরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি অবগত ছিলাম না, তাই ভবিষ্যতে আলোচনা করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
প্রসঙ্গত: বিগত ২০১০ সালের ১০ই জানুয়ারী তারিখে তৎকালীন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্য নির্বাহী পরিষদের ১০ম সভায় অংশগ্রহণকারি সকলের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে রাঙামাটির ক্রীড়াক্ষেত্রে এবং জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অবদান রাখায় স্বাধীনতা সংগ্রামের ঊষালগ্নে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ রাঙামাটির পুরাতন স্টেডিয়ামের নাম সর্বসম্মতভাবে শহীদ আব্দুস শুক্কুর ষ্টেডিয়াম নামকরনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় এবং এই বিষয়ে অন্যান্য কার্যক্রম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের ১৬ই আগষ্ট তারিখ বিকেল সাড়ে ৪টায় তৎকালীন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদের ৫ম সভার মাধ্যমেও শহীদ আব্দুস শুক্কুর ষ্টেডিয়াম নামকরনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় এবং সেটির রেজুলেশন ঢাকায় পাঠানোর প্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ৫ই ডিসেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় রাঙামাটির পুরাতন স্টেডিয়ামকে শহীদ আব্দুস শুক্কুরের নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ শফিক আনোয়ার স্বাক্ষরিত স্মারক নং- এনএসসি/ ০০১/আর/বি/জেন/৪৩১ এর মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আওতাধীন রাঙামাটি পার্বত্য জেলার পুরাতন জেলা স্টেডিয়ামকে প্রাক্তন কৃতি ফুটবল খেলোয়ার প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শুক্কুর এর নামানুসারে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শুক্কুর স্টেডিয়াম নামকরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
যার ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙামাটি সফরে এসে আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটির পুরাতন স্টেডিয়ামকে “বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস শুক্কুর স্টেডিয়াম” নামকরনের ঘোষণা প্রদান করেন।
২০১৩ সালের ১৮ই মার্চ তারিখে রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আল মামুন মিয়া কর্তৃক স্মাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমেও শহীদ আব্দুস শুক্কুর ষ্টেডিয়াম নামের সংশোধনকল্পে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস শুক্কুর ষ্টেডিয়াম নামে নামকরনের জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়।
এদিকে বিগত ২০১৭ সালে রাঙামাটি সদরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনকল্পে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি প্রকল্প আসে। তারই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক বিষয়টি রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থায় গিয়ে মিটিং করেন এবং সে মিটিংয়ে কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাঙামাটির বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস শুক্কুর স্টেডিয়ামের উপর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় সেসময়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বরুন দেওয়ানকে উক্ত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সে মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামকরণকৃত স্টেডিয়াম বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস শুক্কুর স্টেডিয়ামের উপর ওভারলেপিং করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম স্থাপন করা হয়।
ইতিমধ্যেই রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলায় শেষ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ উদ্বোধন করা হলেও সেই ২০১৭ সালে অদ্যবদি পর্যন্ত রাঙামাটি সদরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনের কোনো ভিত্তি প্রস্তুর, সাইনবোর্ড দৃশ্যমান নেই বা উদ্বোধনও করা হয়নি। কাগজেপত্রে রাঙামাটি সদরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম থাকলেও বাস্তবে এই স্টেডিয়ামের অস্থিত্ব কোথাও নেই।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শুক্কুরের ছোট ভাই ইফতেখার ও অপর ছোট ভাই রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা এমদাদ জানিয়েছেন, আমরা ইতোমধ্যেই রাঙামাটির জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত বিয়ষটি জানিয়ে পত্র দিয়েছি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
আলমগীর মানিক : আলমগীর মানিক রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের জালে ধরা পড়লো ২৩ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির বাঘা আইড় ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় রাঙামাটি সদরের বন্দুক ভাঙা ইউনিয়ন থেকে পাস করা ১২০ জন শিক্ষার্থীকে ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : অবৈধ ভাবে চোরাচালানের সময় বিপুল পরিমাণ সেগুন গাছের গোল কাঠ জব্দ করেছে রাজনগর ব্যাটালিয়নের ৩৭ বিজ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশের ন্যায় পর্যটন শহর রাঙামাটিতেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব পর্যটন দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষে র...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : জেলার সদর উপজেলাধীন জীবতলি ও মগবান ইউনিয়নের ৭শতাধিক অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মাঝে রাঙ্গামাটি সদ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান আজ মঙ্গলবার জুরাছড়ি উপজেলা সফরকালে জনপ্রতিন...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © 2023 CHTtimes24 | Developed By Muktodhara Technology Limited