বান্দরবানে লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দূর্নীতির প্রতিবাদে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালন


নুরুল কবির    |    ১১:২১ পিএম, ২০২৩-০৬-০৮

বান্দরবানে লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দূর্নীতির প্রতিবাদে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালন

সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে  দূর্নীতির প্রতিবাদে হারিকেন, কুপি হাতে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে বান্দরবান জেলা বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল ১১ টায় বান্দরবান সদরস্থ  বিদ্যুৎ অফিসের সামনে ঘন্টাব্যাপী  এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে এই সমস্যা সমাধানে  বান্দরবান বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জৈষ্ঠ্যের খর তাপে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এর ওপর বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে মানুষ এক ভয়াবহ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। গ্রামে চাহিদার তুলনায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। গ্রাম-গঞ্জের মানুষ ২৪ ঘন্টায় মাত্র ১ থেকে ২ ঘন্টা বিদ্যুৎ পায়। মফস্বল শহরগুলোতে রাতে ২ ঘন্টার বেশী বিদ্যুৎ থাকে না। দিনের বেলাও অধিকাংশ সময় লোডশেডিংয়ে আচ্ছন্ন থাকে। প্রচন্ড গরম ও যানবাহনের ধুমায়িত বহ্নিতে রাজধানীসহ সারাদেশ যেন গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে। এখানেও দিনে-রাতে ৬ -৭ ঘন্টার বেশী বিদ্যুৎ থাকে না।

মানুষের বসতবাড়িতে সীমাহীন দুর্ভোগের পাশাপাশি বিদ্যুতের অভাবে ক্ষুদ্র, মাঝারী ও বৃহৎ শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে ও পর্যায়ক্রমে সেগুলি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর চেইন রিএ্যাকশনে ক্রমাগতভাবে কর্মহীন হবে লক্ষ লক্ষ মানুষ।

সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজনকে প্রাইভেট কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প দেয়া হয়েছে। তাদের বিপুল-অর্থবিত্তের মালিক বানানোর জন্য এই সকল প্রকল্প স্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়। যাদের মধ্যে কেউ সিঙ্গাপুরে গিয়ে সর্বোচ্চ

ধনীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। অথচ জনগণের পকেট কেটে হাজার হাজার কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে কেবলমাত্র এই খাতে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার উপরে পরিশোধ করা হচ্ছে। এই লুটপাটের পরিণতিই হচ্ছে অভাবনীয় লোডশেডিংয়ের আত্মপ্রকাশ। লোডশেডিংয়ের বর্তমান দুর্বিষহ পরিস্থিতির জন্য বর্তমান সরকারের গণবিরোধী নীতিই দায়ী। বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটকে বৈধ করতেই ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে।

জনগনের মৌলিক নাগরিক চাহিদার সমাধানের পথে না গিয়ে মেগা প্রজেক্টের প্রতি অতি আগ্রহের প্রতিফলনই হলো বর্তমান দুর্বিষহ লোডশেডিং। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা

চুরি ও কুইক রেন্টালের নামে কুইক চুরি বর্তমান সরকারের ঘোষিত কর্মসূচি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি অবিলম্বে অবর্ণনীয় লোডশেডিং বন্ধ এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে জোরালো আহবান জানান।

এসময় বান্দরবান জেলা বিএনপি'র সভাপতি মাম্যা চিং, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, সহ-সভাপতি লুসাই মং মারমা,জেলা বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন তুষার, আবিদুর রহমান, চনুমং মারমাসহ জেলা বিএনপি'র বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

বান্দরবান বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী  সৈয়দ আমির হোসেন জানান, বান্দরবানে ১২ মেগাওয়াট  চাহিদা থাকলেও গড়ে ৩ থেকে ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়ে থাকেন। ফলে কিছুটা বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকে।তবে আগামী মাসের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।