বৈসাবি উৎসব পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ১১:৩১ পিএম, ২০২৩-০৪-১১

বৈসাবি উৎসব পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন: কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি

ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’, মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ আর চাকমাদের ‘বিজু’। এই তিনের আদ্যাক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’। বৈসাবি মানেই পাহাড়ে প্রাণের উৎসব আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন। অরণ্য ঘেরা পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব বৈসু-সাংগ্রাই-বিঝু বা বৈসাবির উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ের আনাচে কানাচে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালের দিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নানা রঙের বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বর্ণাঢ্য বৈসাবি উৎসবের উদ্বোধন করেন উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) ও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, খাগড়াছড়ি মং সার্কেল চিফ রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী ও খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় ডিজিএফআইয়ের ডেট কমান্ডার লে. কর্নেল মো. শাহ আলম সিদ্দিকী, এনএসআইয়ের যুগ্ম-পরিচালক মো. ফিরোজ রাব্বানী, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের প্রধান নির্বাহী কৃষ্ণ লাল চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) টিটন খীসা, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শানে আলম, সেনা রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর মোঃ জাহিদ হাসান, কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, এম. এ. জব্বার, মংক্যচিং চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবি সমিতি’র সভাপতি এড. আশুতোষ চাকমা,পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য শতরুপা চাকমা, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, হিরন জয় ত্রিপুরা, শুভ মঙ্গল চাকমা, নিলোৎপল খীসা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরী, সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা।
উৎসবের উদ্বোধনকালে উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) ও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করতে হবে। সম্প্রীতির উন্নয়ন এবং সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সকল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সেই চিন্তা দিয়েই পাহাড়-সমতলের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। পাহাড়ের সব মানুষ যেন সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করতে পারে সেজন্য বর্তমান আওয়ামীরীগ সরকার কাজ করছে। বৈসাবি উৎসব পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন। বৈসাবি পাহাডী জনগোষ্ঠীর উৎসব হলেও এটি সর্বজনীন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্যদিয়ে পাহাড়ে সম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি আরও সুদৃড় হোক-এ প্রত্যাশা করি। 
বৈসাবি উৎসবের উদ্বোধনের পর খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরুহয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা খাগড়াছড়ি জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে শাপলা চত্বর হয়ে টাউন হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। বর্ণাঢ্য সাজ আর বর্ণিল পোশাকে শোভাযাত্রায় শামিল হন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানা বয়সী মানুষ। উৎসব জুড়ে ছিল চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক।
শোভাযাত্রা শেষে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গণে পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী গড়য়া/গড়িয়া নৃত্যসহ ডিসপ্লেপ্রদর্শন করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির লোকজন।
খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামের এ উৎসব পালন করে আসছে। সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘বৈসাবি’ উৎসব।