রাঙামাটিতে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টায় আসামীর ১০ বছর জেল-জরিমানা


আলমগীর মানিক    |    ০২:৩৪ পিএম, ২০২২-১০-২৭

রাঙামাটিতে  স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টায় আসামীর ১০ বছর জেল-জরিমানা

আলমগীর মানিক


স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্ঠার মামলায় শরৎ ওরফে সুরন তনচংগ্যা নামের এক আসামীকে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ তিন লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার আদালতের এজলাসে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ. ই. এম ইসমাইল হোসেন। এসময় আদালত জরিমানার অর্থ রায় ঘোষনার দিন থেকে ৯০দিনের মধ্যে পরিশোধ ভিকটিম ও তার পিতা-মাতাকে প্রদানের নির্দেশনাও প্রদান করেন।

ধর্ষণ চেষ্ঠা মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তির এই রায় ঘোষনার সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম ও বাদীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, আসামীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোখতার আহম্মদ, অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এই রায়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও আসামীপক্ষ ন্যায় বিচার প্রার্থনায় উচ্চ আদালতে আপীল করার কথা জানিয়েছে। 


লিখিত রায় ঘোষনার সময় আদালত উল্লেখ করেন, এজাহারকারির কন্যা ভিকটিম সীমা (ছদ্মনাম)তনচংগ্যা কাপ্তাই থানাধীন ওয়া¹া ইউপি’র সাপছড়ির স্থানীয় একটি বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতেন। গত ১২/০৪/২০২১ তারিখে স্থানীয় এক শিক্ষক শিমুল তনচংগ্যার কাছে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়িতে ফেরার সময় সকাল সাড়ে ১১টার সময় দেবাছড়া সংযোগস্থল এলাকায় পৌছুলে আসামী শরৎ ওরফে সুমন তনচংগ্যা ভিকটিম স্কুল ছাত্রীকে পেছন দিক থেকে ঝাপটে ধরে ওরনা দিয়ে পেছিয়ে ছড়ার দিকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্ঠা চালায়। এসময় ভিকটিমের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং ধস্তাধস্তিতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।

ভিকটিমের চিৎকারে স্থানীয় দুই বাসিন্দা আপিলি তনচংগ্যা ও পুলবি তনচংগ্যা এগিয়ে এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এসময় আসামী পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে কাপ্তাই থানায় বিগত ১৩/০৪/২০২১ তারিখে মামলা করেন। বিগত ১৫/০৭/২০২১ ইং তারিখে কাপ্তাই থানার এসআই মোঃ মনিরুল ইসলাম আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর৯ (৪) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিগত ১২/১০/২০২২ ইং তারিখে আদালতে এই মামলাটি আমলে নিয়ে ১০/১১/২০২১ ইং তারিখে অভিযোগ গঠন করা হয়। 

১২জন সাক্ষীর সাক্ষ উপস্থাপনের মাধ্যমে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত মৌখিক সাক্ষ্য, দালিলিক সাক্ষ্য, ফরেনসিক সাক্ষ্য ও পারিপাশির্^ক সাক্ষ্য পর্যালোচনায় আসামীর বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত অনুসারে  আসামীর বিরুদ্ধে উক্ত রায় প্রদান করা হয়েছে বলে আদালত তার বক্তব্যে বলেছেন।

বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, আসামী যদি ৯০দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে নাপারে তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৬ ধারার বিধান অনুসরণপূর্বক আসামীর মালিকানাধীন স্থাবর-অস্থাবর বা উভয়বিধ সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুত করে তা ক্রোক ও নিলামে বিক্রয় করে সেই অর্থ রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার জন্য রাঙামাটির জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এই ভিকটিমের পিতা-মাতা তাদের সন্তানের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন।