বাঘাইছড়িতে ৬কোটি টাকার সড়কে ব্যাপক অনিয়মঃ লেখালেখির দরকার নেই বললেন প্রকৌশলী!


ওমর ফারুক সুমন    |    ০২:০১ পিএম, ২০২০-১০-১৬

বাঘাইছড়িতে ৬কোটি টাকার সড়কে ব্যাপক অনিয়মঃ লেখালেখির দরকার নেই বললেন প্রকৌশলী!

বাঘাইছড়িতে এলজিইডির সড়ক তৈরি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে তৈরি উপজেলা সদর মারিশ্যা বাজার, মাইনী মূখ বাজার, ভায়া বাবু পাড়া, বটতলা এবং দক্ষিণ সারোয়াতলী সড়কের ১.৯০৫ কিমি এইচবিপিকরন প্রকল্পের কাজ করছে রাঙ্গামাটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেসার্স ইউটিমং ও এস এস ট্রেড্রাস। ১৭-১৮ অর্থ বছরে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া সড়কের বাকী কাজ করছে মেসার্স নিপা এন্টারপ্রাইজ ও এস, অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।  এইচবিপিকরন ছাড়াও  সড়কের দুই পাশে রয়েছে এল ড্রেন, বক্স কালভার্ট, ও ছোট বড়  ব্রিজ। কাজের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় গ্রাম বাসী কাজে বাধা প্রদান করলেও উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে পূর্বের নিয়মেই কাজ করেছে ঠিকাদার।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও কারবারীদের অভিযোগ কাজ পুরোপুরি শেষ না করে উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে উক্ত কাজের চুড়ান্ত বিল নিয়ে গেছে ঠিকাদার।

৩০নং সারোয়াতলী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জোতিন রায় চাকমা অভিযোগ করেন, সড়কের ড্রেন, কালভার্ট ও ব্রিজ নির্মানে ঢালাই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট ও খোয়া এছাড়াও বালি হিসেবে  পাহাড় কাটা মাটি (স্থানীয়দের ভাষায় জাম বালি) বলা হয়ে থাকে। এছাড়া সিমেন্ট ও পরিমানে কম দেয়া হয়েছে তাই কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগেই দেয়াল সহ ড্রেইন সব ফেটে ও ধসে যাচ্ছে।

এই জনপ্রতিনিধি আক্ষেপ করে বলেন, এডিবির মাধ্যমে সরকার টাকা কম দেয়নি ঠিকাদারের ব্যাপক দুর্নীতির কারণে সড়কের আজ এই অবস্থা। উপজেলা পর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগের যদি সঠিক তদারকি থাকতো তাহলে সড়কটির আজ এই পরিনতি হতো না।

৩৮৪ নং সারোয়াতলী মৌজার কারবারী প্রকাশ চাকমা অভিযোগ করেন, কাজের কোন তদারকি ছিলোনা। কাজ পুরোপুরি শেষ না করেই ঠিকাদার পুরো টাকা তুলে নিয়েছে। সড়কের দুই পাশে ওয়াল ও মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও মাটি ভরাট করা হয়নি তাই সড়কের মাটি সরে গিয়ে বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্গটনা ঘটতে পারে।

এদিকে সড়কের অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার মোঃ জসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রকল্পের ১০% জামানত এখনো অফিসে জমা রয়েছে, লোক পাঠিয়ে দ্রুত সড়ক মেরামতের উদ্যোগ নিবেন বলে জানান।

বাঘাইছড়ি এলজিইডি বিভাগের প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান বরাবরের মতই ঠিকাদারের পক্ষেই সাফাই গেয়ে বলেন, বিষয়টি লেখালেখির দরকার নেই অফিস থেকে ঠিকাদারকে চিঠির মাধ্যমে কাজ সমাপ্তির জন্য বলা হবে। না হয় তার জামানত বাতিল করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পেলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।