রাঙামাটির বড়থলীতে কুকি চীন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত-৩


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০৩:৫৬ পিএম, ২০২২-০৬-২২

রাঙামাটির বড়থলীতে কুকি চীন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত-৩

রাঙামাটির দূর্গম বড়থলী এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ এর সশস্ত্র হামলায় তিন জন নিহত হয়েছে বলে জানাগেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিলাইছড়ি উপজেলাধীন বড়থলী ইউনিয়নের সাইজাম পাড়া এলাকায় এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বড়থলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতোমং মারমা।

নিহতদের মধ্যে দুজনের নাম জানাগেছে, তারা হলেন, বিশ্ব চন্দ্র ত্রিপুরা (৫৮), পিতা বীজলা ত্রিপুরা। আরেক জন হলো সুরেন্দ্র ত্রিপুরার সন্তান চিতারাং ত্রিপুরা (৬৫)। 

এদিকে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, উক্ত সশস্ত্র হামলার ঘটনায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। তার মধ্যে জেএসএস এর তিনজন ও বাকি দু’জন স্থানীয় ত্রিপুরা গ্রামবাসী। 

এদিকে, সশস্ত্র হামলায় প্রতিপক্ষের তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিজেদের ফেসবুক পেইজে ষ্ট্যাটাসের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামে নবসৃষ্ট উপজাতীয়দের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট(কেএনএফ) এর মিডিয়া শাখা।

রাঙামাটির পুলিশ বাহিনী বলছে, তারা বিষয়টি শুনেছেন এবং বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা মুঠোফোনের মাধ্যমে জানান, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তু এলাকাটি অত্যন্ত দূর্গমাঞ্চলে অবস্থিত বিধায় খবর নিতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাইজাম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য নতুন সৃষ্ট কুকি চীন পার্টিকে দায়ী করেছে স্থানীয়রা।

কুকি চীনের পরিচালিত ফেসবুক পেজে দাবী করা হয় নিহতরা জেএসএস’এর সদস্য। জেএসএসের ক্যাম্পে হামলা করে কুকি চীন সফল হয়েছে দাবী করা হয় পেইজে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে স্বশস্ত্র অবস্থায় একদল সন্ত্রাসী সাইজাম পাড়ায় এসে এলাপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যায়। অনেকে আহত হয়। 

বড়থলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতোমং মারমা স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত ৬ জুন সাইজাম পাড়ায় জেএসএস ও কুকি চীন দলের মধ্যে সংঘাত হয়। এতে কুকিচীন বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ জন্য সাইজাম পাড়ার ত্রিপুরাদের দায়ী করে কুকি চিন পার্টি।

এদিকে, কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ’ এর ফেসবুক পেইজে কয়েকদিন আগেই এই ধরনের হামলা চালানোর ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়ে ষ্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছিলো। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, জেএসএস এর সন্ত্রাসীরা স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে মিশে গেছে।

স্থানীয় গ্রামবাসীরাও তাদের সহযোগিতা করছে। জেএসএস সন্ত্রাসীরা যাতে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়, সেবিষয়ে সতর্কবার্তাও উক্ত পেইজে দেওয়া হয়েছিলো। এর মাত্র কয়েকদিন পরেই মঙ্গলবার রাতে এই হামলা চালিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠনটি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমি এই বিষয়ে বড়থলী ইউপি চেয়ারম্যান আতোমং মারমার কাছে জেনেছি। তার দেয়া তথ্য মতে ৩ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে সেটি খুবই দূর্গম একটি এলাকা। যা বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার কাছাকাছি। এবং সেখান থেকেও পায়ে হেঁটে ২ দিন লাগতে পারে। তাই সেখান থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন। তিনি আরও জানান, আমি ওসি কে এই বিষয়ে জানিয়েছি। এবং ঘটনা সঠিক তদন্ত করার জন্য বলেছি।