টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির জনজীবন বিপর্যস্ত


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০৮:৪৯ পিএম, ২০২২-০৬-১৯

টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির জনজীবন বিপর্যস্ত

রাঙামাটির জুরাইছড়ি ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আশা পাহাড়ি ঢলে বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোববার দুপুর থেকে কাচালং নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে এতে পৌরসভা, আতমলী, রূপকারী ও বঙ্গলতলী ইউনিয়নের আশপাশের প্রায় ১০টি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, মাছের ঘের ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কলাবাগান এলাকায় রাস্তার পাশ ভেঙ্গে গেছে।

টানাবর্ষণে রাঙামাটি শহরের পাবলিক হেলথ এলাকায় মাটি ভেঙ্গে পড়লেও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। টানা বৃর্ষ্টি ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঝূকিপূর্ণ অবস্থায় বাস করা জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংয়ের পাশাপাশি অতিঝূঁিকপূর্ন এলাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ গিয়ে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণের ফলে সম্ভাব্য পাহাড় ধসের প্রাণহানী ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, আমরা ইতিমধ্যে জরুরী সভা করেছি এবং রাঙামাটি শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও মাইকিং অব্যাহত রেখেছি।

জেলা প্রশাসক জানান, সম্ভাব্য দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রাথমিকভাবে রাঙামাটি শহরে ২৮টি ঝুকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষনে মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়ক ও পাহাড়ি এলাকায় মাটি ধসের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।  তাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ে বসবাসকারী স্থানীয়দের সতর্ক করে মাইকিং করে সকলকে নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলার ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে পৌরসভার ১নং ওযার্ড মাষ্টারপাড়া, পুরান মারিশ্যা, মধ্যমপাড়ার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রের আসতে শুরু করেছে। তাদের গবাদি পশু পার্শ্ববর্তী উঁচু এলাকায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এদিকে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পৌর মেয়র জমির হোসেন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে উদ্ধার তৎপরতা জন্য নৌকা ও ট্রলার দিয়েছেন এবং সকল ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে অবিরাম বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতায় ব্যাঘাত ঘটছে।