পাহাড়ে হত্যা-চাঁদাবাজিতে নিশ্চুপ থাকলেও ধর্ষনের অভিযোগকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরির চেষ্ঠা কিছু মহলের


আলমগীর মানিক    |    ০৪:৪৩ এএম, ২০২০-১০-১২

পাহাড়ে হত্যা-চাঁদাবাজিতে নিশ্চুপ থাকলেও ধর্ষনের অভিযোগকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরির চেষ্ঠা কিছু মহলের

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তথাকথিত সুশীল সমাজ, এনজিওসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তেমন একটা মুখ খুলেন না। চলমান ঘৃন্যতম ধর্ষনের মতো অপরাধ স্ব-জাতীদের মধ্যে অহরহ ঘটলেও পাহাড়ের তথাকথিত সুশীল সমাজসহ কিছু কিছু মহল বরাবরের মতোই নিশ্চুপ থাকে। কিন্তু যখনই এক সম্প্রদায়ের নারী অন্য সম্প্রদায়ের পুরুষ দ্বারা ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হওয়ার খবর পাওয়া যায়,ঠিক তখনই পার্বত্য চট্টগ্রামের তথাকথিত নারী সংগঠনগুলোসহ বিশেষ একটি মহল পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সাম্প্রদায়িক উষ্কানী সৃষ্টির লক্ষে আন্দোলনের ডাক দেয়। বিষয়টি অত্যন্ত ষড়যন্ত্রমূলক কিছুর ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছেন পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। 

সম্প্রতি পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পরপর বেশ কয়েকজন মানুষ নির্মমভাবে খুন হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার সংগঠনগুলো, এনজিওগুলো, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো ও নারীবাদী সংগঠগুলোর নেতৃবৃন্দের নিশ্চুপতা পরিলক্ষিত হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে জেলার সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা সভায়। 

রোববার রাঙামাটিতে অনুষ্টিত হওয়া জেলার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তথাকথিত এক শ্রেণীর আন্দোলনকারিদের প্রতি ইঙ্গিত করে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের ২৯৯ নং রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করেই বলেছেন, পাহাড়ে বাঙ্গালী পুরুষ কতৃক বাঙ্গালী নারী, আর পাহাড়ি পুরুষ কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের শিকার হলে কেউ মুখ খুলেনা কিন্তু বাঙ্গালি কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের একটি অভিযোগ পাওয়া গেলেই আন্দোলনের নামে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু কিছু মহল এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করার চেষ্ঠা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য।

তিনি বলেন, ধর্ষণকে আমরা প্রচন্ড রকমের ঘৃণা করি এটা বন্ধ হওয়া উচিত। কিন্তু একটাকে ইস্যু বানিয়ে কোন কোন মহল যখন ভিন্ন দিকে ঘটনাকে প্রবাহিত করার চেষ্ঠা করে তাদেরকেও আমরা ঘৃনা করি। এখানে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যেই ঘটনাটাকে কিছু কিছু মহল ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে।

উক্ত আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় বক্তব্যদানকালে সংসদ সদস্য আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে বিরাজমান সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সারাদেশে চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। এই অঞ্চলের সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে শুধু চাঁদাবাজিই নয় এলাকা দখলের উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যা করছে বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, শনিবার বান্দরবান ও রোববার সকালেই রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের রাইখালীতেও একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। সেনাবাহিনী-পুলিশ,বিজিবি-আনসার বাহিনী দিয়ে এসব সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যাবেনা মন্তব্য করে পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহবানও জানিয়েছেন এমপি দীপংকর তালুকদার।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবীর-পিপিএম(সেবা), সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) শিল্পী রানী রায়সহ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান, প্রতিনিধিবর্গ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

সংসদ সদস্যের বক্তব্যের ভিডিও দেখতে আমাদের পেইজে ক্লিক করুন

https://www.facebook.com/watch/?v=611706333045992