২৫০ শিক্ষার্থীর সাথে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সচেতনতামূলক মতবিনিময়


আলমগীর মানিক    |    ০৪:৩১ এএম, ২০২২-০৪-১২

২৫০ শিক্ষার্থীর সাথে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সচেতনতামূলক মতবিনিময়

বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের ব্যানারে রাঙামাটি জেলা পুলিশ কর্তৃক জেলা শহরের একমাত্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে বাল্য বিবাহ, নিরাপদ ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার, অপহরণ, নারী নির্যাতন এবং মাদক সেবন প্রতিরোধে সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঙামাটি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের সহ-সমন্বয়ক (বিপিডব্লিউএন) মাহমুদা বেগম এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্যক ধারনা প্রদান করেন। 

মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নারীর অগ্রযাত্রায় বড় বাধা হচ্ছে বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহ আমাদের সমাজে বর্তমানে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে আর এর পেছনে মুল কারণ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঝড়ে পড়া এবং দারিদ্রতা। বাংলাদেশ পুলিশের তৎপরতায় পূর্বের চেয়ে ইভটেজিং এবং নারী নির্যাতন ব্যাপক হারে কমে গেছে, তবে কিছু কিছু অঞ্চলে অগোচরে এখনো ইভটেজিং এবং নারী নির্যাতন বিদ্যমান। 

বাল্যবিবাহ,নারী নির্যাতন এবং ইভটেজিং প্রতিরোধে বাংলাদেশ পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নিরাপদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নারীদের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ চালু করেছে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন সেন্টার(পিসিএসডব্লিউ) নামক ফেসবুক পেইজ যেখানে তোমরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারো। তারপরও তোমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইমু, হোয়াটসএ্যাপ, টিকটক ইত্যাদি খুব সতর্কতার সহিত ব্যবহার করবে। কারণ দুষ্টু প্রকৃতির একশ্রেণির মানুষ নানান রকম কলা-কৌশল ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে এবং ব্ল্যাকমেইল করে অপহরণ করে। যার ফলে অনেকগুলো পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।

তোমরা যদি কোনো প্রকার ব্ল্যাকমেইলের শিকার হও তাহলে সাথে সাথে দ্রুততার সহিত আমাদের হেল্প লাইনে ও সংশ্লিষ্ট সার্ভিস ডেক্সগুলোতে জানাবে এবং তথ্য দিয়ে অপরাধীকে ধরতে সহায়তা করবে। 
তিনি মাদক সর্ম্পকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশ পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে মাদকের হার অনেকটা কমে গিয়েছে। তবে মাদক এতই বিষাক্ত যে তারুণ্যের শক্তি ও সম্ভাবনাকে শেষ করে দেয়।

আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ তরুণ সমাজকে মাদকসেবন প্রতিরোধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। যে কোনো প্রকার অন্যায় অপরাধ সংগঠিত হতে দেখলে পুলিশকে তথ্যদিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান করেন। অপরাধমুক্ত সুন্দর সমাজ এবং সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ব্যাপক বলেও মন্তব্য করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। 

মতবিনিময় সভায় স্লাইটের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনলাইন সেবা সাইবার স্পেস নারী, ইউমেন্স সার্পোট সেন্টার, নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হেল্পডেক্স, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, পারিবারিক কলহ প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং, দুর্জয়ের ডায়েরি এবং যেকোনো সমস্যা প্রতিকারে জাতীয় জরুরী সেবা-৯৯৯ থেকে কিভাবে সেবা গ্রহণ করবে তা উপস্থাপন করেন। এসময় প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীর মাঝে বাংলাদেশ পুলিশ এবং ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের সেবাসমূহের লিপলেট বিতরণ করা হয়।

সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক উক্ত সভায় কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন, রাঙামাটি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।