রক্তস্নাত পাহাড়ে শান্তি ফেরেনি ২৪ বছরেও! অস্ত্রের মজুদ বাড়াচ্ছে আঞ্চলিকদলগুলো


আলমগীর মানিক    |    ০২:০২ এএম, ২০২১-১২-০২

রক্তস্নাত পাহাড়ে শান্তি ফেরেনি ২৪ বছরেও! অস্ত্রের মজুদ বাড়াচ্ছে আঞ্চলিকদলগুলো

দেশের এক দশমাংশ অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রামের অখন্ডটা রক্ষাসহ সশস্ত্র তৎপরতা বন্ধের লক্ষ্যে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তির আজ দুই যুগফূর্তি। বিগত ২৪টি বছরেও পাহাড়ের মুক্তআকাশে পেখম মেলে উড়তে পারছেনা শান্তির পায়রা। অবৈধ অস্ত্রের ঝন-ঝনানীসহ সশস্ত্র সংঘাতের রক্তে প্রতিনিয়তই রঞ্জিত হচ্ছে সবুজ পাহাড়।
 
একের পর এক খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ আধিপত্যের বিস্তারে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। সংঘাত আর কোন্দলে অশান্ত পাহাড়। নতুন করে দানা বেঁধেছে হিংসা ও প্রতিহিংসা। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, দল বিভক্তি, আধিপত্য বিস্তার ও মতের ভিন্নতার জেরে পাহাড়ের বিবাদমান দলগুলো জড়িয়ে পড়েছে সশস্ত্র সংঘাত-হানাহানিতে।
 
চুক্তির বর্ষপূর্তির ঠিক আগের দিন মঙ্গলবার (৩০নভেম্বর) খোদ রাঙামাটি সদর উপজেলায় স্বজাতীয় প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছে জনসংহতি (সন্তু) নেতা আবিস্কার চাকমা। সে জেএসএস]র একজন শীর্ষ ক্যাডার বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সকল সূত্র। সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা এলাকায় দলীয় দায়িত্ব পালনে রত থাকা অবস্থায় তাকে খুব কাছ থেকে এ্যাম্বুশ করে গুলি করা হয়। বুকে গুলি খাওয়া আবিস্কার ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। শুধু এ ঘটনাই নয় সারা বছরই পাহাড়ের কোথাও না কোথাও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে এমন হত্যাকান্ড ঘটেই চলেছে। এদিকে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে প্রতিনিয়তই অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করছে আঞ্চলিক দলগুলো। এসব সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো চাঁদাবাজির মাধ্যমে বছরে পাহাড় থেকে আদায় করা প্রায় ৪’শ কোটি টাকার একটি বিশাল অংশ ব্যয়ে ভারী ভারী আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হয়েছে।  
 
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী শান্তিচুক্তির পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সামাজিক অপরাধের বাইরে তিন পার্বত্য জেলায় খুন হয়েছে ২ হাজার ৫৭৩ জন মানুষ। অপহৃত হয়েছে অন্তত ২ হাজার ৬২৬ জন। নিহতদের মধ্যে পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায়ে থাকলেও বাঙ্গালীদের সংখ্যা বেশি। বাঙালিরা খুন হয়েছেন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও চাঁদাবাজির জের ধরে এবং অধিকাংশই পাহাড়িদের হাতে। নিহত পাহাড়িরা মারা গেছে তাদেরই সশস্ত্র তৎপরতা ও আধিপত্যের লড়াইয়ের নিজস্ব অন্তঃকোন্দলের কারণে।
 
এদিকে ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে জেএসএস’র হুমকি ধমকিতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলে পদত্যাগের হিড়িক লেগেছে। শান্তির আশায় চুক্তি করে সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসন ও নানাভাবে প্রভূত সুযোগ সুবিধা দেওয়া ছাড়াও সেনাক্যাম্প গুটিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে ১৬ লক্ষাধিক মানুষের জীবন অনিশ্চয়তায় ফেলার আজ দুই যুগ পূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু সবুজ-শ্যামল ছায়া সুনিবিড় পার্বত্য চট্টগ্রামে আজও শান্তি অধরা। চারিদিক বারুদের গন্ধ, রক্তের হোলিখেলা, হিংসা-হানাহানি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী এবং গুম-খুন অপহরণের প্রতিযোগীতায় অশান্তির আগুন প্রতিনিয়ত আরো যেন উস্কে উঠছে।
 
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হলেও এই চুক্তি নিয়ে এখনো পর্যন্ত সংসদের মাধ্যমে কোনো গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। এর মাধ্যমে পাহাড়ে প্রায় আড়াই দশকের বেশি সময় ধরে চলা শান্তি বাহিনী নামক গেরিলা বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটানোর প্রত্যাশাই ছিল চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। কাগজে কলমে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নাম হলেও দেশ বিদেশের পর্যবেক্ষকরা এই চুক্তির নাম দিয়েছিল শান্তিচুক্তি। চুক্তিতে সরকারের পক্ষে জাতীয় সংসদের তৎকালীন চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ্ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের পক্ষে জেএসএস প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা স্বাক্ষর করেন।চুক্তির ফলে প্রধানমন্ত্রী দেশ বিদেশে প্রশংসা পাওয়ার পাশাপাশি নানা পুরস্কার ও উপাধী অর্জন করেন।
 
তবে বিএনপি-জামায়াতসহ সে সময়ে চারদলীয় জোট ‘এই চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ের বাঙলা ভাষি নাগরিকদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করাসহ সংবিধান বিরোধী কিছুর শর্তের কারণে’ এর নাম দিয়েছিল কালো চুক্তি। তারা সন্তু লারমাকে ৩০ হাজার বাঙালির খুনী হিসেবে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনাসহ চুক্তি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আন্দোলনও করে। তবে চুক্তির চার বছরের ব্যবধানে ওই আন্দোলনকারীরা ক্ষমতায় গেলেও তারা চুক্তি বাতিল বা সংশোধন কোনোটাই করেনি। এতে ধরেই নেওয়া হয় তাদের ‘চুক্তি বিরোধিতা’ ছিল গতানুগতিক রাজনীতিরই অংশ।
 
চুক্তির ২৩ বছর পর আজো প্রশ্ন উঠছে আসলেই কি পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে ? প্রশ্নটির উত্তরে যে কেউ বিনা বাক্যব্যয়ে বলতে বাধ্য যে, শান্তিতো আসেই বরং খুন-চাঁদাবাজীর ক্ষেত্র আরো সম্প্রসারিত হয়েছে। চুক্তির কারণে পাহাড় থেকে সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে নেওয়ার কারণে দিনে দিনে পাহাড়- সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়ে উঠেছে।
 
গত চার বছরে শুধুমাত্র রাঙামাটিতেই আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে খুনের শিকার হয়েছে অন্তত ১২৪ জন। গত তিন বছরের তুলনা এবছর হত্যার ঘটনা অবশ্য কিছুটা কমেছে। নিহতদের মধ্যে ৯২ জনই পার্বত্য এলাকার চারটি আঞ্চলিক দলের নেতা-কর্মী। এর মধ্য ইউপিডিএফের ৩৯ জন, জেএসএসের (লারমা) ৩৮ জন, জেএসএসের ১৩ জন ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের ২ জন রয়েছেন। অন্যদের মধ্যে ২০ জন সাধারণ নাগরিক, একজন সেনাসদস্য, বিএনপির নেতা ১ জন, আওয়ামী লীগের ১০ জন ও মগ পার্টির ১ জন রয়েছেন। পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হানাহানির ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে। এই দুই জেলায় নিহত হন ১০৫ জন। আর বান্দরবানে নিহত হন ১৯ জন। ২০১৮ সালে রাঙামাটিতে খুনের শিকার হয় ৩২জন। ১৯ সালে খুন হয় ৪১ জন, ২০২০ সালে খুন হয় ১১জন, আর এ বছর পাহাড়িদের অর্ন্তদ্বন্দ্বে খুনের সংখ্যা ৫। খুনের তালিকায় বান্দরবানের একজন মসজিদের ইমাম রয়েছে।
 
এদিকে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে সন্তু লারমা প্রতিদিন অভিযোগ করছে তাদের আরো সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। অথচ এ অঞ্চলে বসবাসরত বাঙ্গালীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সরকার তাদের সব কিছু দিয়ে অবৈধ অস্ত্র কেনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। পক্ষান্তরে সরকার বলছে চুক্তির ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়ে গেছে। এভাবে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের সূত্র ধরেই পাহাড়ে চলছে বিদেশি মিশনগুলোর নানামুখি য়ড়যন্ত্র।
 
চুক্তি মোতাবেক ৪৫ দিনের মধ্যে শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যদের তালিকা প্রদান করা হয়েছিল এবং ১০ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৮ থেকে ৫ মার্চ ১৯৯৮ পর্যন্ত৪ দফায় ১৯৪৭ জন সশস্ত্র শান্তি বাহিনীর সদস্য শেখ হাসিনা সরকারের নিকট আত্ম সমর্পণ করেন। ৮৭৫টি অস্ত্রসহ ২ লাখের অধিক গলা বারুদ তারা জমা দিয়েছিল। ১৯৯৮ সালের ৫ মার্চ সর্বশেষ দলের আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে জনসংহতি সমিতির সামরিক শাখা শান্তি বাহিনীর পুরোপুরি বিলুপ্তি ঘটলেও স্বসশ্র ক্যাডারের সংখ্যা ও অস্ত্রের মওজুদ আরো তিনগুন বেড়েছে; এমন তথ্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার।
আওয়ামী লীগের হয়ে চারবার রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বার বার পাহাড় থেকে অস্ত্র উদ্ধারে চিরুনী অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়ে আসছেন। এ লক্ষ্যে তিনি কয়েকবার মহাসমাবেশও করেছেন।
 
২০২০ সালের অক্টোবরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী সেনাবাহিনী জিওসিস, পুলিশ প্রধান ও ব্যাব প্রধানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে কিভাবে আইনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠ করা যায় তা নিয়ে তিন পার্বত্য জেলার সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন ও রাজনৈতিক সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে ধারাবাহিক বৈঠক করে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেন। সেখানেও সকলের একটাই মত ছিল পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনা তৎপরতা বৃদ্ধিসহ র‌্যাবের বিশেষ ব্যটালিয়ন নিয়োগ করতে হবে। এর পর নভেম্বরে র‌্যাবের একটি ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠার ব্যপারে সরকারি সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হলেও বিষয়টি অজ্ঞাত কারণে মাঝপথেই থেমে গেছে।
 
তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে ৪৮ শতাংশ বাঙালি। বাকি ৫২ শতাংশ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী উপজাতি অধিবাসী। পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তি চুক্তি করা সত্তেও এখনো জনসংহতির নেতারা তিন পার্বত্য জেলা থেকে বাঙালিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সময়। খোদ সন্তু লারমাও এমন দাবি জানান সময়ে সময়ে। পার্বত্য এলাকার জমির বিরোধ নিরসনে শান্তি চুক্তি অনুযায়ী ২০০১ সালে সরকার ভুমি কমিশন গঠন করে। কিন্তু পার্বত্য গোষ্ঠীগুলো বাধার মুখে ভূমি জরিপ কমিশন কাজ করতে পারছে না। উপজাতীয় নেতাদের আপত্তির পরিপেক্ষিতে সরকার ভূমি কমিশন আইন সংশোধনও করেছে কিন্তু তবুও এর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না।
 
পার্বত্যাঞ্চলের বাঙ্গালী সংগঠনগুলো মনে করছে পার্বত্য চুক্তির এতোবছরেও এই অঞ্চলে বসবাসরত বাঙ্গালীদের কোনো প্রকার ভাগ্যোন্নয়ন ঘটেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, পার্বত্য চুক্তির বিনিময়ে শান্তিতো দূরের কথা বর্তমানে পাহাড়ে বর্তমানে আমরা অসহ্য যন্ত্রনাময় পরিস্থিতিতে বাস করছি। এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। তারা চুক্তি পূর্ণমূল্যায়নের দাবি জানিয়ে বলেছেন, সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের কথাবলে পার্বত্য চুক্তি করা হলেও চুক্তির পরবতীতে শুধুমাত্র সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এর ভাগ্যোন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে।
 
পাহাড়ে শান্তিচুক্তির পক্ষের নিরীহ মানুষদের খুন, অপহরণ করে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে মনে করেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া মন্তব্য করে সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, আজকে অসংযত বক্তব্য, নৈরাজ্যমূলক আচরণ, অস্ত্রের ভাষায় কথা বলা, শান্তিচুক্তির পক্ষের শক্তিকে দূর্বল করা, গুলি করে হত্যা করাসহ বিগত দিনে যারা ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে চিৎকার করেছিলো, তারাই আজকে ইউপিডিএফ এর সাথে হাত মিলিয়েছে। এসব করতে থাকলে চুক্তি বাস্তবায়নের পথ আদৌ কি মশৃন থাকে? দীপংকর তালুকদার বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি শান্তিচুক্তির বিরোধীতাকারি বিএনপির সাথে আঁতাত করে চলেছে চুক্তিরই পক্ষের একটি শক্তি। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নে চুক্তির পক্ষে এবং চুক্তি মানে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে; অন্যথায় বিলম্বের পথ দীর্ঘতরই হতে থাকবে। তিনি সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলন ইউপি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।
 
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পার্বত্য জেলাগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলে নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হবে। তাদের মতে এমনিতেই পাহাড়ে বর্তমানে সুষ্ঠু পরিস্থিতি নেই। এখনো চাষাবাদ, পণ্য পরিবহনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে চাঁদা দিতে হয়। কাঙ্খিত চাঁদা না পেলে তারা খুন, অপহরণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়। সুতরাং সঙ্গত কারণে স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই সেখানে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি প্রয়োজন।
 
সরকারী বিভিন্ন মহলের মতে, শান্তিচুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি বাস্তবায়ন করেছে বাকিগুলোও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন। সরকারের পক্ষ থেকে মাত্র একটিই শর্ত ছিল সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো অস্ত্র সমর্পন করবে। কিন্তু পাহাড়ি নেতাদের রাজনৈতিক ছত্রছায়ার কারণে শান্তি চুক্তির ২৪ বছরেও সেটা সম্ভব হয়নি। তাই পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনাক্যাম্প বৃদ্ধির মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন পাহাড়ের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।