“ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে পাহাড়ে অস্থায়ী সেনাক্যাম্প বৃদ্ধির দাবি আওয়ামীলীগের”

নির্বাচন আসলেই আ’লীগের নেতাকর্মীদের হত্যার মিশনে নামে আঞ্চলিকদলীয় সন্ত্রাসীরা

আলমগীর মানিক    |    ০৫:৫৯ পিএম, ২০২১-১১-০৪

“ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে পাহাড়ে অস্থায়ী সেনাক্যাম্প বৃদ্ধির দাবি আওয়ামীলীগের”

পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর থেকেই প্রত্যেকটি নির্বাচনকালীন সময়ে পাহাড়ে বাছাই করে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতাকর্মীদের হত্যা, অপহরণ, জখমসহ হুমকির মিশনে নামে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিকদলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীদের হত্যাসহ সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প বসানোর দাবি জানিয়েছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার। 

বৃহস্পতিবার(৪ই নভেম্বর) বিকেলে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রভাবিত করার জন্য রাঙামাটির বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তৎপরতা, প্রার্থীদের হত্যা, অপহরণের অপচেষ্টা প্রতিহত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে দীপংকর তালুকদার বলেন, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর যেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে সেসব এলাকায় অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।

নির্বাচনী এলাকায় আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মাঝে মধ্যে অনেকটা প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাদের এই অপতৎপরতার আসল উদ্দেশ্যেই হচ্ছে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে জোর পূর্বক জিতিয়ে নেয়া। এজন্য আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের টার্গেট করে হত্যা, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকী দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। 

এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রহুল আমিন, হাজি কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, কৃষকলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অভয় প্রকাশ চাকমা, দপ্তর সম্পাদক রফিক আহমদ তালুকদার, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে দীপংকর তালুকদার বলেন, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২য় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে রাঙামাটি জেলার বিলাইছড়ি, কাপ্তাই এবং বরকল উপজেলায় ইউপি নির্বাচন। পার্বত্য এলাকার কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর প্রচন্ডভাবে নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তাদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা ও আক্রমনে আমাদের বহু নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। নির্বাচন আসলে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা আরো বেড়ে যায়। যেমন চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত ১৬ অক্টোবর কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি, আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এভাবে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের খুন ও জখম করে চলেছে। ২য় ধাপসহ আগামী প্রত্যেক নির্বাচনকে জোর পূর্বক তাদের অনুকূলে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দৌরাত্ম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমরা মনে করি তাদের এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত ভাবে ব্যাহত হবে।

অবৈধ অস্ত্রধারীদের এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করা না গেলে আসন্ন নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং সন্ত্রাসীরা আরো উৎসাহী হয়ে আগামী সব নির্বাচনে আগের মতো একই পন্থা প্রয়োগ করবে। এতে ভোটাধিকার বঞ্চিত হবে জনগণ, ব্যাহত হবে গণতন্ত্র এমন মন্তব্য করে দীপংকর তালুকদার বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বিগত দু-এক বছর সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা অনেকটা সংকুচিত হয়েছিল। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা অধিক শক্তিশালী হয়ে আবার আমাদের নেতাকর্মী ও নিরীহ জনগণকে খুন, জখম এর পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকী, নির্যাতন, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আতংক সৃষ্টি করে নির্বাচনে তাদের প্রার্থীদের জেতানোর জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রকারীদের সন্ত্রাসী তৎপরতা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশাকরি আসন্ন নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহনযোগ্য করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর চলমান অভিযান আরো জোরদার করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য প্রশাসনিক ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করে প্রত্যেক নির্বাচন সম্পন্ন করার অনুরোধও জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।