৬ গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে অ্যার্টনি জেনারেল বরাবরে স্মারকলিপি রাঙামাটির সাংবাদিকদের


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ০৪:০৫ এএম, ২০২১-০৯-২৩

৬ গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে অ্যার্টনি জেনারেল বরাবরে স্মারকলিপি রাঙামাটির সাংবাদিকদের

বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙামাটি সংবাদদাতা রাঙামাটি প্রেসক্লাবের একমাত্র নারী সদস্যা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বমহলে সমাদৃত মরহুম মোস্তফা কামালের সহধর্মীনি জাহেদা কামালের সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিসেস জাহেদা কামালসহ রাঙামাটির ছয় গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়েরের প্রতিবাদ কর্মসূচীর ধারাবাহিকতায় এবার সরকারের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যার্টনি জেনারেল বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের নেতৃত্বাধীন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

বুধবার বিকেলে প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে নিয়ে রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা জেলা প্রশাসক শিল্পী রানী রায় এর হাতে এই স্মারকলিপির লিখিত কপি তুলে দিয়েছেন রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল ও আনোয়ার আল হক। দাপ্তরিক কাজে বাইরে অবস্থান করায় পরবর্তীতে রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি বিজ্ঞ অ্যার্টনি জেনারেল মহোদয়ের নিকট পৌছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্থ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিল্পী রানী রায়।

লিখিত এই স্মারকলিপিটি পূর্নাঙ্গ নিছে দেওয়া হলো:

রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সদস্য মিসেস জাহেদা কামাল, মোহাম্মদ সোলায়মান ও আলমগীর মানিকসহ ০৬ গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এবং একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কর্তৃক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সাংবাদিক সমাজকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে

বরাবরে
মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এলাকা
শাহবাগ, ঢাকা।

মাধ্যম: জেলা প্রশাসক, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।

প্রিয় মহোদয়
যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে বিনীতভাবে নিবেদন করছি যে, আমরা নি¤œ স্বাক্ষরকারীগণ পার্বত্য জেলা রাঙামাটি থেকে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্র্মী। নানা ঘাত প্রতিঘাত ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আমরা দেশের এই প্রত্যন্ত জেলা থেকে জাতির সেবা করে আসছি। আজ ্একটি অপ্রীতিকর বিষয়ে আপনার মনযোগ আকর্ষণ এবং যথাযথ প্রতিকার পাওয়ার লক্ষ্যে আপনার দারস্থ হতে আমরা বাধ্য হলাম।

হে দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা!

এতো সাধারণ একটি বিষয় নিয়ে একটি সাংবিধানিক পদাধিকারীকে বিরক্ত করা হয়তো দৃষ্টিকটু; কিন্তুু এই সাধারণ বিষয়ে আজ গোটা সাংবাদিক সমাজের মর্যাদা প্রশ্নের মুখে দাঁড়ানোর কারণে আমরা বাধ্য হয়ে আপনার স্মরণাপন্ন হলাম। ঘটনাটি হলো- রাঙামাটি থেকে কাজ করা বিটিভি প্রতিনিধি মিসেস জাহেদা কামালের সাথে ভূমি বিরোধের জেরে তার আত্মীয়দের সাথে দীর্ঘদিন যাবত মনোমালিন্য বিরাজমান। কিন্তু ভূমি বিরোধের এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এই নারী সাংবাদিকের মান মর্যাদা ক্ষুন্ন করাসহ তার চরিত্র হননমুলক মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে তার এক আত্মীয় ইমতিয়াজ কামাল ইমন বেশ কিছুদিন যাবত তার নিজের নামে এবং বেনামে (ফেইক আইডিতে) কুৎসা রটনা করে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ করে আসছিলেন। এই বিষয়ে জাহেদা কামালকে হেনস্তার প্রতিবাদ করায়, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সদস্য এবং এশিয়ান টিভির রাঙামাটি প্রতিনিধি আলমগীর মানিকের পোস্টেও উল্লেখিত ইমন মানহানিকর মন্তব্য করেন। দীর্ঘদিন যাবত বিষয়টি সহ্য করার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি ও রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সদস্য মিসেস জাহেদা কামাল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন (যার নং রাঙামাটি কোতয়ালী থানা- ১৩৩, তাং ০৩/০৮/২০২১খ্রিঃ, রাঙামাটি কগনিজেন্স আদালতের স্মারক নং ৩৫৮২, তাং ১১/০৮/২০২১)।

উক্ত অভিযোগটি বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। কিন্ত এই বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জনাব ইমন পরবর্তীতে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। যে অভিযোগের সাথে জাহেদা কামাল বা আলমগীর মানিকের দুরতমও কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো এক বা একাধিক ফেইক আইডির পোস্ট উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। আমরা পরস্পর জানতে পেরেছি মামলা করার জন্য সে নিজেই ফেইক আইডি খুলে নানারকম বিরূপ মন্তব্যের পোস্ট দিয়ে মামলার প্রেক্ষাপট তৈরি করে। ফেইক আইডির সাথে তাদের দুরতম কোনো সম্পর্ক না থাকলেও আলমগীর মানিক ও জাহেদা কামালসহ পরবর্তীতে দফায় দফায় আরো চারজন গণমাধ্যমকর্মীকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করা হয়। (বিভিন্ন পোস্টের মানহানিকর মন্তব্যের কপি সংযুক্ত)

হে বিজ্ঞজন!

বিষয়টি নিয়ে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি যে,

মূলতঃ পারিবারিক ভূমি বিরোধের ক্ষোভ নিবারণের জন্য জাহেদা কামালের আত্মীয়া আয়েশা আক্তার সোনিয়া ও তার স্বামী ১১৯নং সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুুর রহমান ছিদ্দিকী (সাইফ) পররস্পর যোগসাজশে উল্লেখিত ইমতিয়াজ কামাল ইমনকে ব্যাবহার করছেন। তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাঙামাটির থানা-পুলিশ এমনকি আইন কর্মকর্তাদের কাছে একের পর এক নিজের পদের পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কর্র্মকর্তাদের মোবাইলের কল রেকর্ড চেক করলে যার সত্যতা মিলবে। এই আইন কর্মকর্তা ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজের পদবী ব্যবহারের মাধ্যমে ইমনকে দিয়ে নানা রকম প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সাংবাদিক সমাজের মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন করে চলেছেন যার ফিরিস্তি অনেক লম্বা। যা এই লেখনীতে উল্লেখ করতে গেলে কলেবর বিরক্তিকর পর্যায়ে যেতে পারে বলে উল্লেখ করা গেলো না। এই আইন কর্মকর্তার ক্ষমতার দাপটে রাঙামাটির সাংবাদিক সমাজ বর্তমানে ক্ষুব্ধ এবং কিংকর্তব্যবিমুঢ়। শুধু তাই নয় তিনি পদ পদবির পরিচয় ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ওয়েব পোর্টালে সাংবাদিকদের ভুল বুুঝিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে চলেছেন।

এমনকি এসব সংবাদে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে জড়িয়েও অনাকাক্সক্ষীত প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। একই সাথে তার সহধর্মীনী সোনিয়া নিজের ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে সাংবাদিক ও পুলিশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মানহানিকর পোস্ট প্রকাশ করছেন। যা অনভিপ্রেত, এই বিষয়ে আমরা এতদিন নিশ্চুপ ছিলাম কারণ এতে সামাজিক পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিজের নামে ফেইসবুক আইডি থেকে দেওয়া প্রকাশ্য পোষ্টে সোনিয়া এবং ইমন সাংবাদিক এবং পুলিশের বিরুদ্ধে যে মানহানিকর মন্তব্য করেছেন যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় স্পষ্ট অপরাধ।

শুধুমাত্র ১১৯ নং সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদবীর জোরে তারা এসব অপরাধ করে যাচ্ছেন বলে আমাদের ধারনা। কিন্তু আমরা কারো ক্ষতি করতে চাইনা বলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো প্রতিকার উদ্যোগে যাইনি। এমনকি আমাদের আশঙ্কা রয়েছে যে, কেউ আইনি প্রতিকার চাইতে গেলেও তিনি তার পদবী ব্যবহার করে আইনের গতি রুদ্ধ করতে পারেন।

আমরা মনে করি আইনের রক্ষক এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা হিসেবে আপনার সু বিবেচনার জন্য বিষয়গুলো আপনার গোচরে আনা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

এখানে উল্লেখ্য যে, আমরা জানতে পেরেছি, তারা চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইবুনালে আরো একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে এবং সেখানে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক ও এসএ টিভির রাঙামাটি প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোলায়মানকেও অভিযুক্ত হিসেবে অন্তভর্ূূক্ত করা হয়েছে; অথচ এসব বিষয়ের সাথে এই সাংবাদিকের দুরতমও কোনো সম্পর্ক নেই। এব্যাপারে রাঙামাটি প্রেসক্লাব এক জরুরী সভা আহবান করে মানববন্ধন কর্মসূচী গত ২১/০৯/২০২১ ইং তারিখে পালিত হয়েছে এবং আপনার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্তের আলোকে অত্র স্মারকলিপি প্রদান করা উদ্যোগ নিয়েছে রাঙামাটিতে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীগণ।
অতএব এ বিষয়ে মহানুভব মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিকারের ব্যবস্থাসহ সাংবাদিক সমাজের পাশে থাকার জন্য মহোদয়ের আজ্ঞা হোক।

বিনীত নিবেদক
রাঙামাটিতে কর্মরত সাংবাদিকদেরর পক্ষে

(সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল)
সভাপতি
রাঙামাটি প্রেসক্লাব।   

(আনোয়ার আল হক)
সাধারণ সম্পাদক
রাঙামাটি প্রেসক্লাব।

(ফেসবুকে প্রদত্ত বিভিন্ন ষ্ট্যাটাসের স্কিনশর্ট এর ছবি সংযুক্ত)

সদয় অবগতির জন্য অনুলিপি প্রেরণ করা হলো ঃ
১.    মাননীয় আইনমন্ত্রী, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।
২.    মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।
৩.    মাননীয় তথ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।
৪.    মাননীয় সভাপতি,খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি,জাতীয় সংসদ।
৫.    মাননীয় সভাপতি. রেলপথ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি,জাতীয় সংসদ।
৬.    মাননীয় পুলিশ মহা পরিদর্শক(আইজিপি),বাংলাদেশ পুলিশ।
৭.    মাননীয় সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব
৮.    মাননীয় বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম।
৯.    মাননীয় ডিআইজি, চট্টগ্রাম।
১০.    মাননীয় চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, ঢাকা।
১১.    মাননীয় রিজিয়ন কমান্ডার,রাঙামাটি রিজিয়ন।
১২.    মাননীয় অধিনায়ক, ডিজিএফআই, রাঙামাটি।
১৩.    মাননীয় যুগ্ম পরিচালক, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা(এনএসআই)রাঙামাটি।
১৪.    বিশেষ পুলিশ সুপার, পিবিআই, চট্টগ্রাম বিভাগ
১৫.    মাননীয় জেলা প্রশাসক, রাঙামাটি।
১৬.    মাননীয় পুলিশ সুপার, রাঙামাটি।
১৭.    মাননীয় বিচারক, সাইবার ট্রাইবুন্যাল, চট্টগ্রাম
১৮.    মাননীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব
১৯.    মাননীয় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জজ কোর্ট, রাঙামাটি
২০.    মাননীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, রাঙামাটি আইনজীবি সমিতি