বাঘাইছড়িতে পাহাড় কেটে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা


ওমর ফারুক সুমন    |    ০৫:০১ পিএম, ২০২১-০৯-১৯

বাঘাইছড়িতে পাহাড় কেটে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা

ভূমি বিরোধের জেরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির পশ্চিম লাইল্যাঘোনা এলাকায় অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে জোরপূর্বক বসত ঘর সহ জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আব্দুল মাবুদ নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী। পরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আট সদস্যদের অসহায় হতদরিদ্র একটি পরিবার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম লাইল্যাঘোনা এলাকায় পাহাড়ি উঁচু ভূমিতে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বসবাস রয়েছে হতদরিদ্র ভুক্তভোগী বাচুনি বেগম সহ পরিবারের আট সদস্যের। বাচুনী বেগম তার বাবার ওয়ারিশ সূত্রে মালিক। ছোট একটি ভাঙ্গা ঘর, এই ঘরের তিনটি কক্ষে কোন রকম বসবাস করছেন তারা। তাদের বসতবাড়ির দুই পাশে পরিকল্পিত ও অবৈধভাবে পাহাড় কেটে সমতল করে ফেলা হয়েছে। এতে করে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে পরিবারটি। ভারি বৃষ্টিপাত হলে যে কোন সময় পাহাড় ধসে পরে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও বাড়ির চারপাশের বড়বড় ৪ থেকে ৫টি ফলজ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী বাচুনি বেগম ৩৮১নং বটতলী মৌজার ৫৫নং খতিয়ানে, ১৯০৩নং দাগে, ০.৫৬ শতক রেকর্ড ভুক্ত জমিতে ১৯৫৯/৬০ ইংরেজি থেকে এই জমিতে বসবাস করে আসলেও বর্তমানে তার পার্শ্ববর্তী প্রভাবশালী আব্দুল মাবুদ উক্ত জমি নিজের বলে দাবি করে তাদেরকে এই জমি ছেড়ে দিতে নিয়মিত চাপ ও বল প্রয়োগ করছে। কিন্তু বাচুনি বেগম উক্ত জায়গা ছাড়তে রাজি নয়, এরই জেরে আব্দুল মাবুদ বসতবাড়ীর দুই পাশের মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়। 

ভুক্তভোগী বাচুনি বেগম বলেন, আমার বাবা এখানে ছিল, আমার বড় ভাই বোন ও আমি এখানেই জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে আমি পাহাড়ে লাকরি কেটে কাজ কর্ম করে কোন রকম দুঃখে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। এখন আব্দুল মাবুদ এই জমি তার দাবি করে মাটি কেটে নিয়ে গেছে। আমার বসতবাড়িটি এখন চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ছোট ছেলে, মেয়ে নিয়ে এই বাড়িতে থাকতে খুব ভয় হয়। 

বাড়ির কর্তা আব্দুল রহিম বলেন, ৫৯ সাল থেকে এই জমিতে আমাদের বসবাস, এখন আব্দুল মাবুদ নিজের জমি দাবি করে আমাকে এখান থেকে সরানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলছে। তাতে কোন কাজ না হওয়ায় জোরপূর্বক মাটি কেটে আমার ঘর ধসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বাঘাইছড়ি পৌরসভা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। 

স্থানীয় মুরুব্বি মোঃ নুর হোসেন (৫৫) বলেন, আমরা এতো বছর ধরে দেখে আসছি এরা এখানেই বসবাস করে আসছে। এখন হঠাৎ শুনি আব্দুল মাবুদ এই জমির দাবি করছে। বিষয়টি নিয়ে আবদুল মাবুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জমির কাগজে মালিক দাবী করেন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা এই ধরনের একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।