পাহাড়ের ৫৯ ইউনিয়নকে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের আওতায় আনছে সরকার


নিজস্ব প্রতিবেদক    |    ১০:১৯ পিএম, ২০২১-০৬-০৯

পাহাড়ের ৫৯ ইউনিয়নকে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের আওতায় আনছে সরকার

পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের কাজে হাত দিয়েছে সরকার। আজ বুধবার (৯জুন) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৬তম বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রকল্পটির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শামসুল আরেফিন।

বৈঠক শেষে শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের জানান, দুর্গম এলাকায় স্থায়ী নেটওয়ার্ক স্থাপনের লক্ষ্যে “টেলিযোগাযোগ সুবিধা বঞ্চিত এলাকাসমূহের ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি স্থাপন (কানেক্টেড বাংলাদেশ)” প্রকল্পের অধীন পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি জেলায় (রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) মোট ৫৯টি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ইউনিয়নগুলো অতিদুর্গম বিধায় নিরাপত্তা ঝুঁকি ও পারিপার্শ্বিক প্রতিবন্ধকতার কথা বিবেচনা করে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপন কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এদিন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০তম বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১১টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ছয়টি, স্থানীয় সরকার বিভাগের দুটি, জননিরাপত্তা বিভাগের একটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব ছিল।

জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের জন্য একটি ‘ভেহিক্যাল মাউন্ডেট মোবাইল ইন্টারসেপটর অ্যান্ড রিলেটেড সার্ভিস’ সেবাটি সুইজারল্যান্ডের তরু গ্রুপের স্থানীয় এজেন্ট স্মার্ট এসসিএম সল্যুশনের কাছ থেকে ৬৫ কোটি ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪০ টাকায় কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবে ঢাকা ওয়াসার রামপুরা থেকে ভাটারা হয়ে এয়ারপোর্ট রোড, উত্তরা, গুলশান, বনানী, কচুক্ষেত পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার পরিশোধিত পানির সঞ্চালন লাইন স্থাপন কাজ চায়না জিও ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনকে দেওয়া হয়। ছয়টি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮৯ কোটি ৩১ লাখ ৯২ হাজার ৯৭৪ টাকায় কাজটি পাওয়ার জন্য যোগ্য হয় প্রতিষ্ঠানটি।

বৈঠকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন (৪র্থ পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় এক লাখ শিশুকে ছয় মাস মেয়াদি উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং চার মাস মেয়াদি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য ১১২টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই কাজে ব্যয় হচ্ছে ১৬০ কোটি টাকা।

ঢাকা ওয়াসার এনভাইরনমেন্টাললি সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের পরামর্শক হিসাবে ২০১৫ সালে কুনহাও-ডিডিসি-এফসিইএ ও ভারনেকুলার কনসালটেন্টের যৌথ উদ্যোগকে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৪০ টাকায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

অতিরিক্ত সচিব জানান, প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় এবং প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ ৩৬ মাসের পরিবর্তে ৭৫ মাস করা হয়। একই সঙ্গে অতিরিক্ত দুটি কোটি ৭১ লাখ টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

একইভাবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার গৌরিপুরে পুনর্ভরা নদীর উপর সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ককে আরও ১২ কোটি ৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ৪৩ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার ৩২৪ টাকা।

বৈঠকে হাটিকামরুল ইন্টারচেইঞ্জ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজ দেওয়া হয়েছে চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো গ্রুপকে। ১৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ৭৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকায় কাজটি পেয়েছে চীনের এই প্রতিষ্ঠান।