আলমগীর মানিক | ০২:৩৪ এএম, ২০২১-০৫-২৬
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নানিয়ারচর ব্রীজের নিচে মাটি কাটার একটিমাত্র ডোজার দিয়ে সরু ড্রেনের মতো করে ছড়ার মতো পানি চলাচলের দুইপাশ থেকে মাটি তুলে পাশেই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এই মাটিগুলো আবারো সেখানেই গড়িয়ে পড়ছে। যেখানে বছরের নয়মাস ৩০ থেকে ৪০ ফুট পানি বর্তমান থাকে। বালুমাটিগুলো ডোজার দিয়ে তুলে পাশেই রাখা হচ্ছে, আর বলা হচ্ছে এই মাটির উপরই দুই পাশের সৌন্দর্য্য বর্ধন ও টেকশইয়ের জন্য গাছের চারা লাগানো হবে। মজার বিষয় হলো যেখানে মাটি স্তুপ করা হচ্ছে বর্ষ মওসুমে তা ৩০ ফুট পানির নীচে তলিয়ে যায় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। পানির নীচে এই গাছ কিভাবে টিকবে এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের প্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন নানিয়ারচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী রহমান তিন্নি। পক্ষান্তরে নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জানিয়েছেন, এই প্রকল্প হয়তো অনেক আগে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেখানে সরকার ব্রীজ করে দিয়েছে; তাই এই প্রকল্পের আর কোনো যথার্ততা নেই। এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার আগে আমরা বা সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পরামর্শ করার দরকার ছিল। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এই খাল খননের নামে এই অর্থ ব্যয় জনসাধারণের কোনো কাজেই আসবে না।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, নানিয়ারচরের চেঙ্গী খালে বছরের নয় মাসজুড়েই প্রায় ৩০ ফিট পানির উচ্চ থাকে। শুষ্ক মৌসুমে এটি শুকিয়ে যায়। এই খালে বর্তমানে প্রায় অর্থকোটি টাকা ব্যয়ে খাল খনন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সামনের বর্ষার পানিতে এই কাজের শিকি ভাগও রক্ষা হবে না। কাজে আসবে না তথাকথিত খাল খননের। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে বিগত ২০০৮ সালের দিকে নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও একই স্থানে খাল খনন করা হয়েছিলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে প্রতিবেদককে তিনি তার চট্টগ্রামের কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। চট্টগ্রাম গেলে নিজ কার্যালয়ে প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার্থে এই খাল খনন কর্মসূচী প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিলো যাতে করে মানুষ তিনটা মাস তাদের যাতায়াতের দূর্ভোগ থেকে রক্ষা পায়।
লেকের মধ্যেই ডুবন্ত একটি খাল। যেখানে একটি ব্রীজও নির্মাণ করা হয়েগেছে ইতিমধ্যেই। সেখানে এই ডুবন্ত খাল খনন করে সরকারি প্রায় অর্ধকোটি পানিতে ডুবানোর অর্থটা কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আসলে এখানকার বাস্তবতার আলোকে এই প্রকল্পগুলো নেয়া হয়নি। এসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে সমতলের সাথে মিল রেখে। তাই হয়তো এমনটা হচ্ছে।
অপর প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৬৪ জেলায় খাল খননের আওতায় পার্বত্য রাঙামাটি জেলার ৬টি উপজেলায় ৬টি খাল খনন কার্যক্রম চলমান আছে। ইতিমধ্যে দুইটি উপজেলা কাপ্তাইয়ের কোদালা খালের ৫ কিলোমিটার(অগ্রগতি ৪৪.৮২ শতাংশ), ও রাজস্থলীর বগাছড়া খালের ৬ কিলোমিটার খনন(অগ্রগতি ৩৭.৪০ শতাংশ) কার্যক্রম সমাপ্ত করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে প্রয়োজনীয় বিল সমুদয় পরিশোধ করে দেওয়া হয়েছে। নানিয়ারচর উপজেলার চেঙ্গী খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। চেঙ্গী খালে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই খনন কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। চলতি ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই খনন কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী জানান, জেলায় ডিসি মহোদয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। যেটি জেলা পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন কমিটি নামে পরিচিত। সেই কমিটিতে উপরোক্ত তথ্যাবলি উপস্থাপন করে সেই কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিলগুলো পরিশোধ করা হয়েছে।
এছাড়াও রাঙামাটিতে চলমান কাজগুলোর মধ্যে জুড়াছড়ি উপজেলায় ৭ কিলোমিটার একটি খাল খনন কাজ গত অর্থবছরে ৩০শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এবছর সেই ৩০ শতাংশ বাস্তবায়নকৃত অংশে আবারো ভরাট হয়েগেছে। একই ধরনের একটি খাল খনন কাজ হয়েছিলো রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন যৌথখামার এলাকায়। গত বছর ৫০শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা হলেও চলতি বছরে আবারো সেটি ভরাট হয়ে গেছে।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বড় একটি প্রতিরক্ষা প্রকল্প রয়েছে। সেই প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ-১ ও প্যাকেজ-২ প্রকল্প কাপ্তাইয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কাপ্তাই স্টেডিয়াম, কাপ্তাই স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সংলগ্ন নদী প্রতিরক্ষা কাজ নিয়ে প্যাকেজ-১ এর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। প্যাকেজ-২ এর আওতায় ওয়া¹া বিজিবি ক্যাম্পের কাছে ৪৫০ মিটার খাল খনন কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিকল্পনানুসারে রাঙামাটিতে কাঠাঁলতলী রিজার্ভ বাজার সংযোগ সড়কের ফিসারী বাঁধে তীর প্রতিরক্ষাসহ সৌন্দর্য্যবর্ধন প্রকল্প যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা।
এছাড়াও চট্টগ্রামের হালদা নদীসহ রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই হ্রদ নিয়ে একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে যেটি রিভার ষ্ট্যাডি প্রজেক্ট রয়েছে যেটি ঢাকা থেকে করা হয়েছে। এছাড়াও রাঙামাটির কাচালং ও কর্ণফূলী নদীতে ভাঙ্গনরোধে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ কাজের একটি প্রজেক্টও হাতে নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এই প্রজেক্টটির জন্য আনুমানিক ৩৪৯ কোটি টাকার মতো ব্যয় ধরা হয়েছে বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী।
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা শিথিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশিয় অস্ত্রসহ এক ইউপিডিএফ কর্মীকে আটক হয়েছে বলে জানিয়ে...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যমূলক পার্বত্য কালো চুক্তি ও ব্রিটিশ হিলট্র্যাক্স ম্যানুয়েল ১৯০০ বাতিল করার দাবীতে আজ ঢাকা...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙামাটিতে যুবদল নেতাদের উপর হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশ করেছে ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙামাটি সদর উপজেলার কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : আলমগীর মানিক রাঙামাটিতে অধ্যায়নরত মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবি...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © 2024 CHTtimes24 | Developed By Muktodhara Technology Limited