আজ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ এর শাহাদাৎ বার্ষিকী


মেহেরাজ হোসেন সুজন    |    ০২:২৩ পিএম, ২০২১-০৪-২০

আজ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ এর শাহাদাৎ বার্ষিকী

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলাধীণ বুড়িঘাটের কাপ্তাই হ্রদের নির্জন দ্বীপে চির নিন্দ্রায় শায়িত থাকা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ এর আজ ২০শে এপ্রিল শাহাদাৎ বার্ষিকী। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের এই দিনে বুড়িঘাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হয়েছিলেন।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২০এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন তিনি। ২৬মার্চ যুদ্ধ শুরু হলে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট আক্রান্ত  হলে শত্রু বাহিনীর তিনটি নৌ-যান একাই ধ্বংস করেন তিনি।

১৯৪৩ সালের ১ মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম মুন্সি মেহেদি হাসান ও মুকিদুন্নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন বাঙালীর এই মহান যোদ্ধা। 

পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ২নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ সহযোগে রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। লঞ্চগুলোতে ৬টি ৩" মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর ৩" মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। 

এই সুযোগে হঠাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য, বেশ কয়েকটি স্পীড বোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য আক্রমন করে। মর্টার আর ভারী অস্ত্র দিয়ে চালানো আক্রমণে প্রতিহতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন মুন্সি আব্দুর রউফ। হঠাৎ একটি গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ। স্থানীয় দয়াল কৃষ্ণ চাকমা তার মরদেহ উদ্ধার করে তাকে এই দ্বীপে সমাহিত করেন। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর উদ্যোগে সেই দ্বীপে নির্মিত হয় বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ। 

পার্বত্য অঞ্চলের দূর্গম প্রান্তিক এলাকা নানিয়ারচরে দূর্গম বুড়িঘাটে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া এই মহানযোদ্ধাকে পার্বত্য অঞ্চলের ও নানিয়ারচর উপজেলার গর্ব হিসেবে দাবি করেন নানিয়ারচর উপজেলাবাসীর। এদিকে পার্বত্য চট্রগ্রামের নব নির্মিত সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুটির নামকরণ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফ করার দাবিও জানান স্থানীয়রা।