হারি বৈসু উৎসবে মেতেছে ত্রিপুরা সম্প্রদায় 


আল মামুন    |    ০৭:৩০ পিএম, ২০২১-০৪-১৩

হারি বৈসু উৎসবে মেতেছে ত্রিপুরা সম্প্রদায় 

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী জন গোষ্টির প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব বৈসাবি। মহামারী করোনার কারনে এবার উৎসবের কোন আনুষ্টিকতা না থাকলেও পারিবারিক ভাবে উৎসবটি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পাহাড়ী গ্রামে পালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার চাকমা সম্প্রদায়ের মূল বিঝু,সারাদিন চাকমাদের ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে ঘরোয়া পরিবেশে উৎসব পালনের আয়োজন।
 
মূল বিজুতে প্রধান আকর্ষন থাকে পাজন তরকারী যা কমপক্ষে ৩১ থেকে ১০১টি বিভিন্ন প্রকার সবজি মিক্স করে রান্না করা হয়। পাহাড়ী জনগোষ্ঠি মনে করে এটি যেহেতু বিভিন্ন প্রকার সবজি মিক্স করে রান্না করা সেহেতু এটি ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ একটি তরকারী। থাকে পাজন ছাড়া প্রতিটি ঘরে ঘরে নানা রকমারী খাবার আইটেম।

এ দিনে সাধারণত কাউকে নিমন্ত্রণ করতে হয় না। যে কেউ যে কোন ঘরে গিয়ে বিজু খেতে পারেন। অপিরিচিত কেউ এলে থাকে স্বসম্মানে আপ্যায়ন করা হয়। পাহাড়ের বিঝু এখন একটি সার্বজনীন উৎসব। এখানে পাহাড়ী জনগোষ্ঠির পাশাপাশি বাঙ্গালীরা বেড়াতে যায় তাদের বন্ধু-বান্ধবদের বাড়ীতে। 

বিজু উপলক্ষে থাকে প্রতিটি গ্রামে নানান ধরনের খেলাধুলার আয়োজন  করা হয়ে থাকে তবে মূল বিজুর দিনে খেলাধুলার আয়োজন বন্ধ থাকে। এ দিন চলে শুধু অতিথি আপ্যায়ন আর ঘুরাফেরা।

ত্রিপুরা সম্প্রদায় মেতেছে হারি বৈসু উৎসবে:  আজ সকাল খাগড়াছড়ি সদরস্থ খাগড়াপুর গ্রামবাসী ত্রিপুরা সনাতন সম্প্রদায়ীর ফুলপূজার মধ্যে দিয়ে হারি বৈসু অনুষ্টানে শুভ সুচনা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মিসেস মল্লিকা ত্রিপুরা। "হারি বৈসু" ত্রিপুরা সনাতন সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রাচীন একটি ঐতিহ্য, যুগ যুগ ধরে এটি পালিত হয়ে আসছে ।

হারি বৈসুর এই দিনে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে দলবেঁধে ফুল চুরি তোলা, তারপর সকালে সূর্য্যদয়ের সাথে সাথে নারী,পুরুষ, যুবক,যুবতী এমকি  ছোট ছোট বাচ্চারাও কলা পাতায় ফুল  সাজিয়ে মোমবাতি ও আগরবাতি প্রজলন করে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্য প্রণাম করার জন্য নদীতে জড়ো ফুল পূজা করে থাকেন।

পুরাতন বছরের সকল বাঁধা,বিপদ অমঙ্গল যাতে কেটে যায় এবং আগমন নতুন বছর যাতে সুখী,শান্তি সমৃদ্ধির ভরপুর হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা করা হয়। এছাড়াও বাঁশের মধ্যে কাঁচাহলুদ,কুচাই বথাই,সুকুই (গিলা)ও পবিত্র পানি দিয়ে বিশেষ ধরণের এক পবিত্র জল তৈরি করা হয় যেটা প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মাঝে ছিটানো হয়।

ত্রিপুরা ভাষায় আমরা যেটাকে বলা হয় "কমা বতই” শুভ উদ্ভোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মিসেস মল্লিকা ত্রিপুরা,আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিসেস কৈহেলি ত্রিপুরা। এসময় সমাজিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আশা লোকজন অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন।