নিজেই অসুস্থ কাপ্তাইয়ের ১০ শয্যা হাসপাতাল


কাপ্তাই প্রতিনিধি    |    ০৯:২৮ পিএম, ২০২০-০৯-১০

নিজেই অসুস্থ কাপ্তাইয়ের ১০ শয্যা হাসপাতাল

কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই ইউনিয়নের ১৩ হাজার মানুষের রোগমুক্তির ‘কাপ্তাই ১০ শয্যার হাসপাতাল’টি এখন নিজেই অসুস্থ্য। দীর্ঘ দিন যাবৎ সংস্কার না হওয়ায় হাসপাতালটির বর্তমান অবস্থা এমন জরাজীর্ণ, রোগীর আগেই প্রয়োজন হাসপাতালের চিকিৎসা। কাপ্তাই ছাড়াও পাশ্ববর্তী উপজেলার রোগীরা হাসপাতালটিতে এসে ফিরতে হচ্ছে চিকিৎসা ছাড়াই। 

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রতিটি সেবার কক্ষ, ডাক্তার, রোগী, কর্মচারীর থাকার আবাসস্থলেরই বর্তমানে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি কক্ষের উপরের টিন নষ্ট হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে ছিদ্র বেয়ে হাসপাতালজুড়ে সয়লাব হয় পানিতে। থাকেনা রোগীর সেবা নেওয়ার সামান্যতম পরিবেশ। পাশাপাশি ডাক্তারের সেবা দিতেও পোহাতে হয় দূর্ভোগ। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ ও কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে হাসপাতালটি পরিচালিত হয়। অথচ দীর্ঘ বিশ বছর যাবৎ হাসপাতালটি কেবল নামে আছে, কাজে নেই। কাপ্তাই ইউনিয়নের ১৩ হাজার জনসাধারণ হাসপাতালটির উপর নির্ভর করলেও ফলাফল যেন শূণ্যের কোঠায়। হাসপাতালটিতে অবকাঠামোর পাশাপাশি রয়েছে ডাক্তার, নার্স, কর্মচারীর ব্যাপক সংকট। হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে স্থীয়ভাবে একজন ডাক্তারদের অবস্থান করার নিয়ম থাকলেও কে মানে কার আইন? 

অভিযোগ রয়েছে, সপ্তাহে একজন ডাক্তার ২/৩ বার কয়েক ঘণ্টার জন্য অবস্থান করে আবার চলে যায়। ইউনিয়নের কোন রোগী হঠাৎ মারা গেলেও মৃত সনদ দেওয়ার মত পাওয়া যায়না একজন ডাক্তার। উপায়হীন হয়ে তাই রোগীর ছুটতে হয় স্থানীয় ফার্মেসীর পল্লী চিকিৎকের দ্বারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, যারা ইতোপূর্বে টেন্ডার নিয়ে হাসপাতালের তালিজোড়া দিয়ে কাজ করেছেন। কাজের মান ছিল অত্যন্ত নিম্ন মানের। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে ছিদ্র হওয়া টিন বেয়ে পানি পরে সয়লাব হয় হাসপাতাল আঙ্গিনা।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রাহেলা বেগম, ইমতিয়াজ খাতুন, মো. ফরিদ উদ্দিন, নাহিদুল ইসলাম আমাদের কাপ্তাই সংবাদদাতা নূর হোসেন মামুনকে জানান, মরিচা ধরে ছাদের টিন নষ্ট হয়েছে। সংস্কার না করায় প্রভাব পড়েছে চালের বাটামেও (গাছের বাকল দিয়ে তৈরী প্রতিরোধক)। হাল্কা বৃষ্টি হলেই থাকেনা হাসপাতালে দাঁড়ানোর মতো কোন অবস্থা। তাই জরুরীভাবে প্রয়োজন হাসপাতালটি মেরামত করা। 

হাসপাতালের জরাজীর্ণ অবস্থা নিয়ে একাধীকবার সংস্কার করার কথা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও দীর্ঘ দিন যাবৎ সংস্কারে নেওয়া হচ্ছেনা উদ্যোগ উল্লেখ করে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ আহমেদ চৌধুরী জানান, কাপ্তাইয়ের ১০ শয্যা হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা ও সংস্কার নিয়ে উপরস্থ দপ্তরে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। আশা করি শীঘ্রই একটা ফলাফল পাওয়া যাবে।